স্লোভাকিয়া সরকার সম্প্রতি দেশে ৩৫০টি বাদামি ভাল্লুক নিধনের অনুমোদন দিয়েছে। একটি ভাল্লুকের হামলায় এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সরকার বলছে, ভাল্লুকের আক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে এই পদক্ষেপ জরুরি। তবে পরিবেশবাদীরা একে ‘অযৌক্তিক’ ও ‘প্রকৃতির জন্য বিপজ্জনক’ বলে অভিহিত করেছেন।
স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোর নেতৃত্বাধীন সরকার বলেছে, দেশে আনুমানিক ১৩০০ ভাল্লুক রয়েছে, যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকার মনে করে, ৮০০ ভাল্লুকের সংখ্যা যথেষ্ট। ফলে অতিরিক্ত ভাল্লুক নিধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,
“আমরা এমন একটি দেশে বাস করতে পারি না, যেখানে মানুষ বনাঞ্চলে যেতে ভয় পায়। নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে ভাল্লুক নিধনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।”
এ উদ্দেশ্যে বিশেষ জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে, যা ৭৯ জেলার মধ্যে ৫৫টি জেলায় কার্যকর থাকবে।
স্লোভাকিয়ার পুলিশ জানিয়েছে, মধ্য স্লোভাকিয়ার ডেটভা শহরের কাছে এক ব্যক্তির মৃতদেহ পাওয়া গেছে, যার শরীরে ভাল্লুকের আক্রমণের স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে।
এ ছাড়া, ২০২৪ সালের মার্চে এক বেলারুশিয়ান নারী ভাল্লুকের ধাওয়া খেয়ে গিরিখাতে পড়ে মারা যান। কিছুদিন পর, একটি ভিডিও ভাইরাল হয় যেখানে দিনের আলোতেই একটি ভাল্লুককে শহরের রাস্তায় দৌড়াতে দেখা যায়। পরে কর্তৃপক্ষ একটি ভাল্লুক হত্যা করলেও পরিবেশবিদরা দাবি করেন, সেটি প্রকৃত হামলাকারী ভাল্লুক ছিল না।
পরিবেশ সংরক্ষণবাদীরা সরকারের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য ও বিরোধী দল ‘প্রগ্রেসিভ স্লোভাকিয়া’র নেতা মিখাল ভিয়েজেক বলেন,
“এটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক সিদ্ধান্ত নয়।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্লোভাকিয়ায় ভাল্লুকের সংখ্যা স্থিতিশীল রয়েছে এবং নিধনের পরিবর্তে অন্য সমাধানের কথা ভাবা উচিত।
কার্পাথিয়ান পর্বতমালাজুড়ে রোমানিয়া, পশ্চিম ইউক্রেন, স্লোভাকিয়া ও পোল্যান্ডে এই বাদামি ভাল্লুকের দেখা মেলে। পরিবেশবাদীরা আশঙ্কা করছেন, অতিরিক্ত নিধন এই সুরক্ষিত প্রজাতির অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
সরকারের সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক পরিবেশ সংস্থাগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এখন দেখার বিষয়, স্লোভাকিয়া সরকার বিরোধী মতামতকে উপেক্ষা করে পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করে কি না।
মন্তব্য করুন