অধিকৃত পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি স্থাপনের স্বীকৃতি এবং গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের জন্য নতুন একটি সংস্থা গঠনের ইসরাইলি সিদ্ধান্তের কঠোর নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব।
সৌদি আরবের মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরে আন্তর্জাতিক ও মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের কোনো প্রচেষ্টাকে সৌদি আরব সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সৌদি আরব গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের লক্ষ্যে ইসরাইলি দখলদার কর্তৃপক্ষের একটি সংস্থা গঠনের ঘোষণার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।’
ইসরাইল আগে জানিয়েছিল, তারা গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের ‘স্বেচ্ছা প্রস্থান’ তদারকি করার জন্য একটি সরকারি সংস্থা গঠন করছে, যা সম্প্রতি ইসরাইলি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেয়েছে।
এদিকে, দীর্ঘ ১৫ মাসের অব্যাহত আগ্রাসনের পর ২০২৫ সালের ১৯ জানুয়ারি গাজায় ৪২ দিনের একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। ওই চুক্তির আওতায়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৩৩ জন ইসরাইলি জিম্মি এবং প্রায় ১,৯০০ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পায়।
তবে দখলদার ইসরাইলি সেনাবাহিনী ১৮ মার্চ থেকে গাজায় ফের বিমান ও স্থল হামলা চালাতে থাকে, এতে এ পর্যন্ত ৭৩০ জন নিহত এবং ১,২০০ জন আহত হয়েছেন।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলের সামরিক আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ৫০,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন ১,১৩,৪০০ জনের বেশি।
এছাড়া, ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ রয়েছেন আরও প্রায় সাড়ে ১২ হাজার ফিলিস্তিনি, যাদের মৃত ধরে মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৬২ হাজারেরও বেশি। প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনি অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
এই পরিস্থিতির মধ্যে, গাজার বিভিন্ন এলাকা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের নীল নকশা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে ইসরাইল। নতুন গঠিত সংস্থাটি ইসরাইলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ফিলিস্তিনিদের অনির্দিষ্ট তৃতীয় দেশে স্থানান্তর করার দায়িত্ব পালন করবে।
সোমবার, সৌদি আরব পশ্চিম তীরে ১৩টি অবৈধ বসতি স্থাপনার অনুমোদন দেওয়ারও নিন্দা জানিয়েছে। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এগুলোকে ‘উপনিবেশিক বসতি’ হিসেবে বৈধতা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
সৌদি প্রেস এজেন্সি সূত্রে জানা গেছে, সৌদি আরব বিশ্বাস করে, ফিলিস্তিনি জনগণের বৈধ অধিকার অর্জন এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ১৯৬৭ সালের সীমারেখার ভিত্তিতে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া স্থায়ী শান্তি অর্জন সম্ভব নয়।
সূত্র: আরব নিউজ
মন্তব্য করুন