গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়া এলাকা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করছে ইসরাইলি বাহিনী। দ্রুত এলাকা খালি না করলে হামলা চালানো হবে বলে ‘চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি’ দিয়েছে ইসরাইল।
তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ইসরাইলের সামরিক মুখপাত্র আভিখাই আদরায়ে সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) লিখেছেন—
“জাবালিয়া এলাকায় বসবাসকারী গাজার সমস্ত নাগরিকের জন্য এটি হামলার আগের চূড়ান্ত সতর্কবার্তা।”
তিনি ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণের ‘পরিচিত আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে’ চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগেও তিনি উত্তর গাজার বেইত লাহিয়া ও বেইত হানুনের বাসিন্দাদের জন্য একই ধরনের ঘোষণা দেন।
এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা উপত্যকা খালি করে ফিলিস্তিনিদের মিশর, জর্ডান ও অন্যান্য দেশে পাঠানোর একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছিলেন। তবে এই প্রস্তাব মুসলিম বিশ্বসহ আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে।
দীর্ঘ ১৫ মাসের সংঘাতের পর চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি গাজায় ৪২ দিনের একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। এই চুক্তির আওতায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে—
✔ ৩৩ জন ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়।
✔ প্রায় ১,৯০০ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পান।
তবে ১৮ মার্চ থেকে ইসরাইলি বাহিনী পুনরায় বিমান ও স্থল হামলা শুরু করে, যেখানে এখন পর্যন্ত—
৭৩০ জন নিহত হয়েছেন।
১,২০০ জন আহত হয়েছেন।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী—
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইলের আগ্রাসনে ৫০,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
আহত হয়েছেন ১,১৩,৪০০ জনের বেশি।
ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ রয়েছেন প্রায় ১২,৫০০ ফিলিস্তিনি, যাদেরকে মৃত ধরে নেওয়া হলে মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৬২,০০০-এরও বেশি।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) গত নভেম্বরে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (ICJ) ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা চলমান।
ফিলিস্তিনিদের উপর নিরবচ্ছিন্ন হামলা, উচ্ছেদ ও মানবাধিকার লঙ্ঘন বিশ্বজুড়ে নিন্দার মুখে পড়েছে। তবে আন্তর্জাতিক চাপ থাকা সত্ত্বেও ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসন থামার কোনো লক্ষণ নেই।
👉 গাজার পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠছে, যেখানে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের বেঁচে থাকার লড়াই আরও কঠিন হয়ে উঠছে।
মন্তব্য করুন