মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় মান্দালয় প্রদেশের লেত প্যান হ্ল্যা গ্রামে শনিবার সামরিক জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় কমপক্ষে ২৭ জন নিহত হয়েছেন। এ হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। হামলার সময় গ্রামটি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।
মিয়ানমারের মান্দালয় পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (এমডিওয়াই-পিডিএফ) এর একজন মুখপাত্র জানান, শুক্রবার রাত ৩টার দিকে সিঙ্গু শহর থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দূরে গ্রামটি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। তবে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এমডিওয়াই-পিডিএফের মুখপাত্র ওসমন্ড জানান, বিমান থেকে ছোড়া বোমার আঘাতে গ্রামের একটি বাজার এবং পাশের অন্তত ১০টি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, হামলাটি সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে নয়, বরং বেসামরিক জনগণকে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ছয়জন শিশু রয়েছে।
২০২১ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানে দেশের গণতন্ত্রপন্থী সরকার পতিত হওয়ার পর থেকে জান্তা-বিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়। এই সময় থেকে মিয়ানমারে পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (PDF) এবং অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘু গেরিলা গোষ্ঠী জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে একযোগে লড়াই চালাচ্ছে।
গত বছর পিপলস ডেমোক্রেটিক ফোর্স (পিডিএফ) ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলি ৩টি প্রধান সংগঠন হিসেবে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স গঠন করে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে একযোগিতায় লড়াই চালায়। সামরিক বাহিনী, বিশেষত বিমান হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে, যদিও প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে কোন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেই।
মিয়ানমারের স্থানীয় গবেষণা সংস্থা ন্যান লিন থিট অ্যানালিটিকা জানায়, ২০২১ সাল থেকে ক্ষমতা নেওয়ার পর, জান্তা বাহিনী ২ হাজার ২২৪ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে এবং ৪ হাজার ১৫৭ বার বিমান হামলা চালিয়েছে। এর ফলে আরও ৩ হাজার ৪৬৬ জন আহত হয়েছে।
এ ঘটনার মাধ্যমে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে বেসামরিক জনগণের তীব্র ক্ষোভ এবং ক্ষতির চিত্র আরও স্পষ্ট হয়েছে।
মন্তব্য করুন