গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদু ট্যাঙ্গারা ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
এ সময় গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। তিনি বলেন, “গাম্বিয়া এই মামলা দায়ের করেছিল এবং এটি চালিয়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে চরমভাবে নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য, যাতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যায়।”
মামাদু ট্যাঙ্গারা আরও বলেন, “আমি আপনাকে নিশ্চিত করতে পারি, গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছেন এবং এটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। আমরা এ বিষয়টিকে আবারও আন্তর্জাতিক আঙিনায় তুলে ধরতে চাই। গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট এবং জনগণ এই বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গাদের পক্ষে গাম্বিয়ার পদক্ষেপ এবং এ মামলার সফল পরিণতির জন্য আফ্রিকান দেশটির অব্যাহত প্রতিশ্রুতি ও প্রচেষ্টার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা চাই এই মামলা সফল হোক। আমরা আপনাদের সমর্থন চাই। এটি আমাদের জন্য বড় ধরনের সহায়তা।”
গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, “আপনার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা রোহিঙ্গাদের জন্য সম্মানজনক জীবনের পথ প্রশস্ত করবে। আপনি গাম্বিয়ায় সুপরিচিত। আপনার উপস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সর্বদা আপনার পাশে থাকবে।”
গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধান উপদেষ্টার নতুন দায়িত্বের সফলতা কামনা করেন এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে তার চ্যালেঞ্জিং মিশনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস রোহিঙ্গাদের জন্য সাহায্য সংগ্রহে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন এবং রাখাইনে মানবিক সহায়তা, খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের ওপর গুরুত্ব দেন, যাতে আরও মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য না হয়।
প্রধান উপদেষ্টা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও গভীর করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আপনাদের কীভাবে আমরা সাহায্য করতে পারি, আমাদের জানান।”
উভয় নেতা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে যৌথভাবে কাজ করার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা আফ্রিকায় দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য ক্ষুদ্রঋণের সম্ভাবনা এবং সহিংসতা-কবলিত অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা করেন।
সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সংকট ও সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন