মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মনে করেন, ইউক্রেন একদিন রাশিয়ার অংশ হতে পারে। প্রায় তিন বছর ধরে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তির পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে আসা ট্রাম্প সোমবার ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ নিয়ে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “তারা হয়তো একটি চুক্তি করতে পারে, আবার নাও করতে পারে। তারা চাইলে ইউক্রেন রাশিয়ার হতে পারে, আবার তা নাও হতে পারে।”
এ সপ্তাহের শেষদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জেডি ভ্যান্স। বৈঠকের মাধ্যমে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানের একটি পথ খুঁজতে চান ট্রাম্প।
জেলেনস্কির মুখপাত্র সেরগি নিখিফোরভ এএফপিকে জানান, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আগামী শুক্রবার মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সের ফাঁকে ভ্যান্সের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
ট্রাম্প আরও বলেন, যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাব প্রস্তুত করতে তার বিশেষ দূত কিথ কেলোগকে শিগগিরই ইউক্রেনে পাঠানো হবে। জেলেনস্কির দপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, কেলোগ ২০ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন সফর করবেন, তবে তার নির্দিষ্ট কর্মসূচি সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি।
ট্রাম্প সমঝোতার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক বিনিয়োগের লাভ নিশ্চিত করতে চান। তিনি বলেন, “আমরা ইউক্রেনে প্রচুর অর্থ দিচ্ছি, তাই আমি চাই, আমরা কিছু ফেরত পাই। আমি বলেছি, আমরা এর বিনিময়ে কিছু চাই—যেমন ৫০০ বিলিয়ন ডলারের বিরল খনিজ সম্পদ। আর তারা মূলত এতে সম্মত হয়েছে।”
তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি রাশিয়ার সঙ্গে কোনো চুক্তিতে যাওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চাচ্ছেন। কিয়েভের আশঙ্কা, যদি কোনো চুক্তিতে পর্যাপ্ত সামরিক প্রতিশ্রুতি না থাকে—যেমন ন্যাটো সদস্যপদ বা শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন—তাহলে রাশিয়া নতুন করে হামলার জন্য সংগঠিত হতে পারে এবং সামরিক শক্তি বাড়ানোর সময় পেয়ে যাবে।
সোমবার এক ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি ইউক্রেনের জন্য বাস্তবিক শান্তি ও কার্যকর নিরাপত্তা নিশ্চয়তার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “এটি শুধু ইউক্রেনের জন্য নয়, বরং পুরো স্বাধীন বিশ্বের জন্য নিরাপত্তার বিষয়। মানুষের নিরাপত্তা, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা জরুরি।”
ট্রাম্প যুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও জেলেনস্কি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এর আগে সরাসরি আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তাই কোনো চুক্তির সম্ভাবনা এখনো অনিশ্চিত।
তবুও ট্রাম্প আশাবাদী, তিনি মধ্যস্থতা করে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারবেন। তবে কীভাবে দুই পক্ষকে আলোচনায় আনবেন, সে সম্পর্কে এখনো নির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব দেননি।
মন্তব্য করুন