RCTV Logo আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৮:৫৯ পূর্বাহ্ন

হামাস নির্মূলের ফন্দি আঁটছেন নেতানিয়াহু

ছবি: সংগৃহিত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র পৌঁছেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। স্থানীয় সময় রোববার বিকেলে তিনি ওয়াশিংটনে পৌঁছান।

মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক পরিবর্তন ও আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ট্রাম্প ও নেতানিয়াহু। ধারণা করা হচ্ছে, এই আলোচনায় গাজা উপত্যকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ পরিকল্পনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য হামাসকে সম্পূর্ণভাবে নির্মূলের নতুন কৌশল নির্ধারণ করা।

টাইমস অব ইসরায়েল-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বৈঠকে আলোচ্য বিষয়গুলোর কিছু ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, “গাজা উপত্যকায় হামাসের শাসনের অবসান ঘটানো এবং ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির বলয় সম্প্রসারিত করব এবং গাজার সংকট সমাধানের কার্যকর উপায় বের করব।”

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু ও ট্রাম্পের আলোচনার অন্যতম বিষয় হতে পারে গাজার জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর পরিকল্পনা। যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল অনুযায়ী, গাজা থেকে ব্যাপক হারে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে নেওয়া গেলে হামাস শাসনের অবসান ঘটানো সহজ হবে এবং এটি ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য দীর্ঘমেয়াদে লাভজনক হতে পারে। তবে এই পরিকল্পনা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে।

বিশেষ করে, মানবাধিকার সংগঠনগুলো একে দমনপীড়ন ও জোরপূর্বক স্থানান্তরের কৌশল হিসেবে দেখছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গেলে সৌদি আরব ও কাতারের মতো দেশগুলো যদি ফিলিস্তিনের পক্ষে কঠোর অবস্থান নেয়, তবে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এটি সহজ হবে না।

নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, তার আলোচনায় মূলত তিনটি বিষয় প্রাধান্য পাবে, তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করেননি। তিনি বলেন, “আমরা এমন একটি মধ্যপ্রাচ্য গড়তে চাই, যেখানে ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকবে এবং সন্ত্রাসবাদ শিকড় গাড়তে পারবে না। গাজার সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই করা আমাদের নৈতিক কর্তব্য।”

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর এই বৈঠকের পর গাজায় সামরিক অভিযানের মাত্রা আরও তীব্র হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের এই নতুন পরিকল্পনা আরব বিশ্বে বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। নেতানিয়াহু অবশ্য আশাবাদী যে, আরব দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে এবং শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে তারা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ পুনর্গঠন করতে পারবেন।

নেতানিয়াহু ও ট্রাম্পের বৈঠক শুধু কূটনৈতিক আলোচনাই নয়, এটি গাজার ভবিষ্যতের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেছেন, “আমরা শান্তির বলয় সম্প্রসারিত করতে যাচ্ছি। গাজা আমাদের নিয়ন্ত্রণে আসবেই।” বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে গাজায় দীর্ঘস্থায়ী দখলদারিত্ব এবং জনসংখ্যা পরিবর্তনের চেষ্টা হতে পারে, যা শুধু ফিলিস্তিন নয়, গোটা মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে

Facebook Comments Box

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সীমান্তে বিজিবির বিশেষ অভিযানে ফেন্সিডিল ও মোটরসাইকেল জব্দ

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ৬১৮টি, খসড়া তালিকা প্রকাশ

ডাকসুর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জয় পেলেন স্বামী-স্ত্রী

হার দিয়ে বিশ্বকাপ বাছাই শেষ আর্জেন্টিনার

ডাকসুর জয়কে ‘জুলাই প্রজন্মের বিজয়’ বললেন নবনির্বাচিত ভিপি

বিপুল ভোটে বিজয়ী তন্বি

১২ সম্পাদকীয় পদের মধ্যে ৯টিতে ছাত্রশিবিরের জয়

ডাকসু নির্বাচনের ফল ঘোষণার অপেক্ষা : সিনেট হলে উপচেপড়া ভিড়, স্লোগান

তিন হলের ভোট গণনা শেষ

আগামীকাল ঢাবির সব ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ

১০

লালমনিরহাটে ঘুমন্ত স্বামীর শরীরে গরম তেল ঢেলে গ্রেফতার স্ত্রী

১১

কয়েকটি বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ, লোডশেডিং নিয়ে যে বার্তা দিল পিডিবি

১২

আমি কোনো দলের নই, কখনো রাজনীতি করিনি : ঢাবি উপাচার্য

১৩

কাতারে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল

১৪

থমথমে ঢাবি ক্যাম্পাস, সতর্ক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

১৫

এখনও শ্রমজীবী মানুষের সাথে ধনী শ্রেণীর বৈষম্য করছে সরকার: মোশরেফা মিশু

১৬

লালমনিরহাটের গাছ কাটতে গিয়ে রিকশাচালকের মৃত্যু

১৭

রাজশাহীতে পৃথক পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত

১৮

জামিন পেলেন সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীন

১৯

বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী

২০