ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির বিষয়ে সমঝোতা সত্ত্বেও ইসরাইলি প্রশাসনের স্বস্তি মিলছে না। শেষ জিম্মি ঘরে ফেরার আগ পর্যন্ত প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দেশটির হাজারো বিক্ষোভকারী।
গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রতি সপ্তাহেই এমন প্রতিবাদ হয়েছে। অংশগ্রহণকারীরা গাজায় হামাসের হাতে আটক ব্যক্তিদের ছবি ধারণ করে তাদের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।
ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হন। তবে, অতি-ডানপন্থী রাজনীতিবিদদের অনেকেই এই চুক্তির বিরোধিতা করছেন। মন্ত্রিসভায় ভাঙনের শঙ্কায় নেতানিয়াহু এতদিন যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করে এসেছিলেন, কিন্তু এবার চুক্তি এড়ানো সম্ভব হয়নি।
আজ রোববার (১৯ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা। তবে চুক্তি বাস্তবায়নের মাত্র ১২ ঘণ্টা আগে, শনিবার রাতে তেল আবিবে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন। তারা “শেষ জিম্মি ঘরে ফেরার আগ পর্যন্ত” লেখা ব্যানার হাতে প্রতিবাদ জানান।
বিক্ষোভকারীরা একাধিক ধাপে জিম্মি মুক্তির পরিবর্তে একটি সমন্বিত চুক্তির দাবি তুলেছেন। তারা আশঙ্কা করছেন, ধাপভিত্তিক মুক্তির প্রক্রিয়ায় ৯৮ জন জিম্মির কেউ কেউ মুক্তি থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।
অন্যদিকে, শত শত মানুষ এই চুক্তির বিরোধিতা করে তেল আবিবে সমাবেশ করেন। তাদের মতে, হামাসের সঙ্গে এই চুক্তি ইসরাইলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি এবং এটি ১৫ মাসের যুদ্ধের পর আত্মসমর্পণের সমান।
হামাস-ইসরাইল চুক্তির প্রথম ৪২ দিনের পর্যায়ে হামাস ৩৩ জন ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে। এর মধ্যে অনেকেই ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরাইলে হামাসের আকস্মিক হামলার সময় অপহৃত হন। তবে দুই বিশেষ ব্যক্তি—অ্যাভেরা মেঙ্গিস্তু (২০১৪ সাল থেকে বন্দি) এবং হিশাম আল-সাইয়েদ (২০১৫ সাল থেকে বন্দি)—তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।
ইসরাইলের পক্ষ থেকে এই চুক্তির অধীনে ১,৯০৪ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। আজই ফিলিস্তিনের ৭৩৭ বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, তবে তা বিকেল ৪টার আগে নয়।
যুদ্ধবিরতির এই দিনটি বৈশ্বিক রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর পরদিনই যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফার শাসন শুরু হতে যাচ্ছে।
মন্তব্য করুন