গতকাল শুক্রবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে উৎসবের আমেজে মুখরিত ছিল। বিদেশ থেকে ফুটবলের স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন ৪৩ জন প্রবাসী তরুণ ফুটবলার। হামজা, জামাল ও শমিতদের পথ অনুসরণ করে তারা এখন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) তিন দিনব্যাপী ট্রায়ালে অংশ নিতে প্রস্তুত। আরও পাঁচজন ঢাকার পথে রয়েছেন।
শনিবার (২৮ জুন) থেকে শুরু হচ্ছে এই ট্রায়াল, যা চলবে তিন দিন। ফুটবলারদের অনূর্ধ্ব-১৯ ও অনূর্ধ্ব-২৩—এই দুই গ্রুপে ভাগ করে সকাল ও বিকেলে অনুশীলনের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হবে।
শুক্রবার ফুটবলারদের রেজিস্ট্রেশন ও ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে বাফুফে সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম বলেন, “মোট ৪৮ জন ফুটবলার ট্রায়ালে অংশ নেবেন। এর মধ্যে ৪৩ জন ইতিমধ্যে ঢাকায় পৌঁছেছেন, বাকি পাঁচজন দোহা হয়ে আসছেন।”
তিনি আরও জানান, “অনেক ফুটবলারের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তারা নিজেদের খরচে সন্তানদের পাঠিয়েছেন, এজন্য আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাই। বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের প্রতি তাদের আস্থা রয়েছে, এটা আমাদের জন্য গর্বের।”
এই ট্রায়ালের আয়োজনে সমন্বয়কের দায়িত্বে রয়েছেন ডেনমার্ক প্রবাসী সাকিব মাহমুদ, যিনি জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার বন্ধু হিসেবেও পরিচিত। ইংল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালিসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা বেশিরভাগ ফুটবলারই সাকিবের উদ্যোগে ট্রায়ালে অংশ নিচ্ছেন। কেউ কেউ সরাসরি বাফুফের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই সুযোগ পেয়েছেন।
প্রাথমিকভাবে ৫২ জন ফুটবলারের নাম থাকলেও শেষ পর্যন্ত সংখ্যা কমে ৪৮-এ দাঁড়িয়েছে। এ প্রসঙ্গে সাকিব মাহমুদ বলেন, “দুজন খেলোয়াড় ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়েছেন। আর মধ্যপ্রাচ্যে ফ্লাইট সমস্যার কারণে একজন দেরিতে আসছেন। পাঁচজন ফুটবলার ফ্লাইট বাতিলের কারণে দোহায় আটকা পড়েছিলেন, এখন তারা ঢাকার পথে।”
তবে ট্রায়ালে অংশ নিলেই যে জাতীয় দলে জায়গা পাবেন, এমন নিশ্চয়তা নেই। ফাহাদ করিম স্পষ্ট করে বলেন, “ট্রায়ালে ভালো করলেই সরাসরি দলে সুযোগ মিলবে না। ফুটবলারদের পারফরম্যান্সের তথ্য ও ভিডিও আমাদের টেকনিক্যাল ডিপার্টমেন্ট সংরক্ষণ করবে। জাতীয় দলের কোচদের প্রয়োজন অনুযায়ী পরবর্তীতে তাদের ডাকা হতে পারে।”
তিন দিনের এই ট্রায়াল তাই প্রবাসী ফুটবলারদের জন্য স্বপ্নপূরণের এক সুযোগ। তাদের চোখে এখন একটাই লক্ষ্য—বাংলাদেশের জার্সি গায়ে দিয়ে মাঠে নামার সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করা।
মন্তব্য করুন