যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি কৌশলগত পারমাণবিক স্থাপনায় বিধ্বংসী হামলা চালিয়েছে। রোববার (২২ জুন) ভোরে ইরানের ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহানের পরমাণু সুবিধাগুলোতে এই হামলা পরিচালিত হয়। অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র তাদের অত্যাধুনিক বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমান ব্যবহার করেছে, যা মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের ঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের পর একটানা ৩৭ ঘণ্টা আকাশে অবস্থান করে।
নিউইয়র্ক টাইমসের এক গোপন সূত্রের বরাতে জানা গেছে, মার্কিন বি-২ বিমানগুলো মিসৌরি থেকে উড্ডয়নের পর আকাশে থাকা অবস্থায়ই একাধিকবার জ্বালানি সংগ্রহ করে। এই দীর্ঘস্থায়ী মিশনে বিমানগুলো ইরানের সুরক্ষিত পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে সফলভাবে আঘাত হানে।
ইরানের সবচেয়ে সুরক্ষিত ফোর্দো পারমাণবিক কেন্দ্র ধ্বংস করতে যুক্তরাষ্ট্র ছয়টি শক্তিশালী ‘বাঙ্কার-বাস্টার’ বোমা ব্যবহার করেছে। ফক্স নিউজের উপস্থাপক শন হ্যানিটি দাবি করেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে ফোনে জানিয়েছেন, পাহাড়ের গভীরে অবস্থিত এই স্থাপনা ধ্বংস করতে পূর্বধারণার চেয়ে বেশি বোমার প্রয়োজন হয়েছিল।
হামলার আরেকটি দিক হলো—যুক্তরাষ্ট্রের সাবমেরিন থেকে ৩০টি টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়, যা ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়। সূত্রমতে, সাবমেরিনগুলো লক্ষ্যবস্তু থেকে প্রায় ৪০০ মাইল দূরে অবস্থান করছিল।
এই হামলার পেছনে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগকে কারণ হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে ইরানের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি, তবে এই হামলা ইরান-মার্কিন উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
এই অভিযান মার্কিন সামরিক শক্তির একটি বড় প্রদর্শন হিসেবে দেখা হচ্ছে, বিশেষ করে বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমানের দীর্ঘস্থায়ী মিশন ক্ষমতা এবং সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার সক্ষমতা বিশ্বব্যাপী আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
মন্তব্য করুন