গাজা উপত্যকায় অবিস্ফোরিত গোলাবারুদ ও বোমা নিয়ে নতুন উদ্বেগ দেখা দিয়েছে ইসরাইলি বাহিনীর মধ্যে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর ছোড়া অসংখ্য অবিস্ফোরিত গোলাবারুদ গাজার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে রয়েছে। ইসরাইলি সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, এই অস্ত্রগুলো থেকে ফিলিস্তিনিরা ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) তৈরি করেছে কি না, তা নিয়ে ইসরাইলি বাহিনী তদন্ত শুরু করেছে।
গত বুধবার (৮ জানুয়ারি) ইসরাইলি সেনাবাহিনী ঘোষণা দেয়, উত্তর গাজার বেইত হানুন এলাকায় একটি ট্যাংকের নিচে আইইডি বিস্ফোরণে তাদের তিন সেনা নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। এছাড়া, রোববার (১০ জানুয়ারি) তুর্কি সংবাদমাধ্যম জানায়, গাজায় পুঁতে রাখা বোমার বিস্ফোরণে আরও চার ইসরাইলি সেনা নিহত হয়েছে।
ইসরাইলি বাহিনী গাজায় ব্যাপক পরিমাণ গোলাবারুদ নিক্ষেপ করেছে। বিমান বাহিনী যুদ্ধের শুরু থেকে প্রায় ৩০ হাজার বোমা ফেলেছে, যার মধ্যে অনেকই অবিস্ফোরিত। চ্যানেল ১২-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব বোমার ওজন এক টনেরও বেশি হতে পারে।
জাতিসংঘের মাইন অ্যাকশন সার্ভিস (ইউএনএমএএস)-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় প্রায় ৭,৫০০ টন অবিস্ফোরিত বোমা বা অস্ত্র ছড়িয়ে আছে। এগুলো অপসারণ করতে ১৪ বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ২৪-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরবরাহ করা কিছু অস্ত্র এবং গোলাবারুদে প্রযুক্তিগত ত্রুটি রয়েছে। বিশেষত, যুদ্ধের শুরুতে ব্যবহার করা প্রায় ৪০ শতাংশ বোমাকে ‘ডাম্ব বোমা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা যথাযথভাবে বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম হয়নি।
গাজায় অবিস্ফোরিত বোমার উপস্থিতি শুধু ইসরাইলি বাহিনীর জন্য নয়, বরং সেখানকার বেসামরিক জনগণের জন্যও বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুদ্ধ-পরবর্তী মাইন পরিষ্কার এবং অবিস্ফোরিত গোলাবারুদ অপসারণে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার প্রয়োজন হবে।
এই পরিস্থিতি গাজায় চলমান সংঘাতের ভয়াবহতাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে এবং এটি অঞ্চলটিতে দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা এবং মানবিক সংকট সৃষ্টি করতে পারে।
মন্তব্য করুন