বিশ্বব্যাপী এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে পারে, এমন সতর্কবার্তা দিয়েছেন গবেষকরা। তারা জানিয়েছেন, আকস্মিকভাবে এইচআইভি প্রতিরোধে তহবিল কমানোর ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ মৃত্যুর মুখে পতিত হতে পারে। এছাড়া, আগামী পাঁচ বছরে এক কোটি ৮ লাখ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গবেষকরা উল্লেখ করেছেন যে, বিশেষত নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলো এইচআইভি বা এইডস মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। ফেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ব্রিটেন, জার্মানি এবং নেদারল্যান্ডস এইচআইভি প্রতিরোধে বৈশ্বিক সহায়তা হ্রাসের ঘোষণা দেয়। এসব দেশের বৈদেশিক সহায়তার বাজেট কমানোর ফলে এইচআইভি প্রতিরোধ কর্মসূচি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই খাতে বৈশ্বিক সহায়তার প্রায় ৯০ শতাংশ আসে এসব দেশ থেকে, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অবদান একাই ৭২ শতাংশ।
২০১৫ সাল থেকে, নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলো তাদের এইচআইভি প্রোগ্রামের বাজেটের প্রায় ৪০ শতাংশ আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর নির্ভর করে এসেছে। গবেষণার ফলাফল অনুসারে, তহবিল কমানো হলে এইচআইভি সংক্রমণের হার ২০১০ সালের পূর্বের স্তরে ফিরে যেতে পারে, যা বিশ্বের জন্য একটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের সংক্রামক রোগের অধ্যাপক ড. আলী জুমলা বলেছেন, “এই ফলাফল একটি গুরুত্বপূর্ণ স্মারক। এতে স্পষ্ট যে, এইচআইভি’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অগ্রগতি টেকসই বিনিয়োগ ও রাজনৈতিক ইচ্ছার ফল।” তিনি সতর্ক করে বলেন, “যদি তহবিল কমানো হয়, তাহলে লাখ লাখ মানুষ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়বে।”
গবেষণাটি আরও বলেছে যে, তহবিল কমানোর পর, ২০৩০ সালের মধ্যে ১ কোটি ৮ লাখ মানুষ নতুন করে এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে এবং ২৯ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে। আফ্রিকার বহু দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার ওপর নির্ভরশীল, যেখানে শিশুরা এবং যৌনকর্মীরা এইচআইভির প্রতি সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।
তবে বর্তমানে একমাত্র আশা ২০২৬ সাল পর্যন্ত প্রাপ্ত তহবিল, যা কিছুটা শূন্যস্থান পূরণ করতে পারে। বৈশ্বিকভাবে এইডসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কিছুটা কমলেও, মৃত্যু ৭ লাখ ৭০ হাজারে পৌঁছাতে পারে।
সবশেষে, এই গবেষণাটি তহবিল হ্রাসের গুরুতর পরিণতি তুলে ধরছে, যা এইচআইভি প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা পরিষেবাগুলোকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করতে পারে।
মন্তব্য করুন