কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মার্ক কার্নি, যিনি জাস্টিন ট্রুডোর উত্তরসূরি। নির্বাচিত হওয়ার পরপরই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধে জয়ের অঙ্গীকার করেছেন।
সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, আমেরিকানদের কোনো ভুল করা উচিত নয়। হকির মতো, বাণিজ্যের খেলাতেও কানাডা জিতবে।
আগামী কয়েকদিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন কার্নি। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর তার জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রথম ভাষণে কানাডার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কারোপের সমালোচনা করেছেন।
ট্রাম্প সম্প্রতি কানাডার পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেন। এর প্রতিক্রিয়ায় সোমবার কার্নি ঘোষণা করেন, যুক্তরাষ্ট্র কানাডাকে সম্মান না দেখানো পর্যন্ত মার্কিন পণ্যে পাল্টা শুল্ক বজায় থাকবে।
বিজয় ভাষণে কার্নি বলেন, “কানাডার শ্রমিক, তাদের পরিবার এবং ব্যবসা-বাণিজ্যকে আক্রমণ করছেন ট্রাম্প। আমরা তাকে সফল হতে দেব না।”
এ সময় দর্শকশ্রোতাদের মধ্যে দুয়ো ধ্বনি শোনা যায়।
ট্রাম্পের নতুন শুল্কের হুমকিতে কানাডার অর্থনীতি মন্দার ঝুঁকিতে পড়েছে। কার্নি বলেন, “আমরা এক অন্ধকার সময় পার করছি, এই অন্ধকার সময় নিয়ে এসেছে একটি দেশ যাকে আমরা আর বিশ্বাস করতে পারি না। আমরা বিস্ময় কাটিয়ে উঠছি, কিন্তু আমরা যেন কখনও শিক্ষা ভুলে না যাই: আমাদের নিজেদেরই নিজেদেরকে দেখতে হবে। আমাদের একে অপরকে দেখতে হবে। সামনের কঠিন দিনগুলোতে আমাদের একসঙ্গে থাকা প্রয়োজন।”
বাণিজ্য যুদ্ধ জয়ের অঙ্গীকারের পাশাপাশি, কার্নি কানাডা সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এটি ছিল ট্রাম্পের একটি প্রধান দাবি, যে কারণে তিনি কানাডা সীমান্ত দিয়ে অভিবাসী ও মাদক পাচার বন্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ করেছিলেন।
কানাডা এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সাবেক গভর্নর, কার্নি ৮৬ শতাংশ ভোট পেয়ে লিবারেল পার্টির প্রতিদ্বন্দ্বী তিন প্রার্থীকে বিপুল ব্যবধানে পরাজিত করেছেন। যদিও রাজনীতিতে তার পূর্ব কোনো অভিজ্ঞতা নেই।
জাস্টিন ট্রুডো ৯ বছর ক্ষমতায় থাকার পর গত জানুয়ারিতে পদত্যাগের ঘোষণা দেন এবং তার পরই কানাডায় আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের জন্য নতুন নেতা হিসেবে কার্নিকে বেছে নিয়েছে লিবারেল পার্টি।
নতুন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর কার্নি কানাডায় সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদি তা না হয়, বিরোধী দল এ মাসেই অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের জন্য সরকারকে বাধ্য করতে পারে।
মন্তব্য করুন