তথ্য প্রযুক্তি ডেস্ক 

আপনি কি এআই চ্যাটবটের সঙ্গে নিয়ম করে কথা বলেন? যদি করে থাকেন, তাহলে হয়তো এআইয়ের একটা ‘সীমাবদ্ধতা’ চোখে পড়বে। চ্যাটজিপিটি, জেমিনি বা ক্লাউড—প্রত্যেকটা এআই চ্যাটবটই এই ‘সীমাবদ্ধতা’র শিকার। আপনি অনেক সময় দেখবেন চ্যাটবটে আগের চ্যাটে যা জানতে চেয়েছিলেন, সেটি পুরো ভুলে মেরেছে।
আগের প্রশ্ন আবার করলে এমন উত্তর দিচ্ছে, সেটি খুবই কনফিউজিং বা রিপিটেটিভ। আর এ সমস্যার উত্তর লুকিয়ে আছে দুটি শব্দে— ‘কনটেক্সট উইন্ডো’।
সম্প্রতি ইউটিউবার ম্যাট পোকক এআইয়ের এই সমস্যা সামনে তুলে ধরেছেন। একটি ভিডিওতে তিনি দেখিয়েছেন— কনটেক্সট উইন্ডো লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল (এলএলএম) সবচেয়ে বড় সমস্যা। যার প্রভাব পড়েছে ইউজারদের ওপরে।
পোকক আরও বলেছেন, ধরা যাক কনটেক্সট উইন্ডো হলো এআই মডেলের শর্ট-টার্ম মেমোরি। প্রতিবার যখন আপনি এআইকে কোনো প্রশ্ন করবেন, তখন এআই উত্তর দেয়। সেই সময়ে এআই মডেলে যা প্রসেসিং হয়, সেটিকে বলা হয় ‘টোকেন’।
আরও পরিষ্কার করে বললে আপনি যদি ‘Anonymous’ লেখেন, এআইয়ের মগজে সেটি ঢোকে ‘anony’ এবং ‘mous’ হিসেবে। অর্থাৎ দুটি টোকেনে।
এলএলএম টোকেন হলো— ইনপুট। আর এআই মডেলের দেওয়া উত্তর হলো— আউটপুট। যদি কোনো এআই মডেলের দুই লাখ টোকেন কনটেক্সট উইন্ডোতে থাকে, সে ক্ষেত্রে ধরে নিতে হবে একবারে সে দুই লাখ টোকেনকেই পড়তে পারবে। তার ভিত্তিতেই যাবতীয় উত্তর দেবে। তাই যে এআই মডেলের কনটেক্সট উইন্ডোতে যত বেশি টোকেন থাকবে, সেটি তত বেশি রিচ করবে। এরপর যে প্রশ্নটা উঠবে, তা হচ্ছে— এআইয়ের ইনফিনিটিভ মেমোরি নেই?
উত্তরটা এক কথায় ‘না’। এটা হওয়া অসম্ভব। কনটেক্সট ইউন্ডোতে ধার্য টোকেনের বাইরে কোনো কিছু এলেই সেটিকে এআইকে ফিড করতে হয়। যেটি বেশ খরচসাপেক্ষ। তাই স্বাভাবিকভাবেই কনটেক্স উইন্ডোর ক্ষমতা বাড়ানোর খরচও যথেষ্ট। তাই এই ধারণক্ষমতার বাইরে কোনো কিছু এলেই এআই গুবলেট করতে শুরু করে। যেটি পোককেক পরিভাষায়— লম্বা চ্যাট থেকে ঠিক তথ্য বের করে খড়ের গাদায় সূচ খোঁজার শামিল।
এ কারণে একেকটি এআই মডেল একেক রকমের। যেমন ‘ক্লাউড ৪.৫’-এর টোকেন লিমিট ২ লাখ। ‘জেমিনি ২.৫’-এ সেটাই ২০ লাখ। অনেক প্ল্যাটফর্মের ক্ষেত্রেই সেটি আবার কয়েক হাজার। তাই ক্লাউডের থেকে জেমিনির এআই অবশ্যই ভালো।
আরও ভালোভাবে বুঝতে এআইয়ের সঙ্গে হওয়া আপনার কোনো লম্বা চ্যাট স্ক্রল করুন। আপনি দেখবেন এআই চ্যাটের শুরুর দিকে এবং শেষের দিকে সবচেয়ে ভালো পারফর্ম করেছে। এর কারণ হলো— আমি-আপনি প্রত্যেকেই সাম্প্রতিক ঘটনা কিংবা ইনফরমেশনে জোর দিই। এআই এ প্রবণতা বুঝে নিয়ে সেভাবেই উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করে যায়। তাই প্রথমেই জানিয়ে দিচ্ছে ঠিক কী হয়েছে। শেষে হয়তো বলছে পরিণতি কী বা কোথায়, আর মাঝখানটা চর্বিতচর্বন। অর্থাৎ লম্বা লিখলেই ধরা পড়ে যাচ্ছে, এআই এখনো পুরোপুরি ত্রুটিমুক্ত নয়!
মন্তব্য করুন