মদিনা মুনাওয়ারার ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো মসজিদ আল-গামামা। এর সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্মৃতি। ইতিহাসবিদদের মতে, এখানেই ঈদের নামাজ ও বৃষ্টির (ইসতিসকা) নামাজ আদায় করেছিলেন রাসুলুল্লাহ (সা.)।
সৌদি বার্তা সংস্থা এসপিএ-এর খবরে বলা হয়েছে, এ মসজিদ মদিনার প্রাচীন ঐতিহ্য ও ইসলামী ইতিহাসের জীবন্ত সাক্ষ্য বহন করে। মসজিদে নববী থেকে প্রায় ২০০ মিটার পশ্চিমে ঐতিহাসিক আল-মুনাখা ময়দানে অবস্থিত এই মসজিদ।
গামামা শব্দের অর্থ হলো, মেঘ। বলা হয়ে থাকে, যখন নবী করিম (সা.) এই স্থানে নামাজ আদায় করছিলেন, তখন একটি মেঘ তার ওপর ছায়া দিয়ে রেখেছিল। সেই ঘটনাকে স্মরণ করেই মসজিদটির নাম রাখা হয় আল-গামামা মসজিদ।
মসজিদের স্থাপত্যে রয়েছে চমৎকার প্রাচ্য ঐতিহ্যের ছাপ। বাইরের দেয়ালে ব্যবহৃত হয়েছে কালো পাথর, প্রবেশদ্বারে আছে সূক্ষ্ম নকশা করা কাঠের দরজা এবং উত্তর-পশ্চিম কোণে দাঁড়িয়ে আছে একটি উজ্জ্বল সাদা মিনার।
ভেতরে দক্ষিণ দিকে রয়েছে একটি সুন্দর মিহরাব, যার ডান পাশে রয়েছে সাদা মার্বেলের তৈরি মিম্বর। পুরো স্থাপত্যে পুরনো ইসলামি স্থাপত্যকলার সৌন্দর্য ঝলমল করছে।
রাসুল (সা.)-এর সময়ে মসজিদে গামামাহ’র পাশে কোনো মসজিদ ছিল না। ৯১ হিজরির দিকে খলিফা ওয়ালিদ বিন মালেক এখানে মসজিদ তৈরি করেন। দীর্ঘ ইতিহাসে মসজিদটি বহুবার সংস্কার ও পুনর্নির্মাণের মধ্য দিয়ে গেছে। সম্প্রতি মদিনা মিউনিসিপ্যালিটি ঐতিহাসিক ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ রেখে এর পুনর্নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে। দর্শনার্থীদের নবী করিম (সা.)-এর যুগের আভাস অনুভব করাতে নতুন সংস্কারে পুরোনো সৌন্দর্য বজায় রাখা হয়েছে।
যে স্থানে আল-গামামা মসজিদটি নির্মিত হয়েছে তা প্রাচীনকালে ‘আল-মুনাখা’ নামে পরিচিত ছিল। হাজি ও বণিকদের কাফেলা উট নিয়ে এখানে এসে বিরতি দিত এবং এখানে উট বেঁধে রাখত। মহানবী (সা.)-এর নামাজের স্থানটি বর্তমানে মুসলমানদের কাছে ইতিহাস ও শ্রদ্ধার প্রতীক হয়ে আছে।
মন্তব্য করুন