কুড়িগ্রামের উলিপুরে একই সড়কে দুই কিলোমিটার দূরত্বে দুটি ভাঙা ব্রিজের কারণে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয়রা। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে এ অবস্থা চলতে থাকলেও স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দফতরের কোনো পদক্ষেপ না থাকার অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এদিকে ভাঙা ব্রিজের স্থলে নতুন করে ব্রিজ দুটি নির্মাণের আশ্বাসেই আটকে আছে সংশ্লিষ্ট দফতর।
সরেজমিনে দেখা গেছে, একই সড়কে দুটি ব্রিজের একটির একপাশ ভেঙে পানিতে তলিয়ে থাকায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। আর অন্যটিতে ফাটল ধরে ডেবে যাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে যাতায়াতের ব্যবস্থা। ফলে সড়কটিতে বন্ধ হয়ে গেছে যানবাহন চলাচল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৩ সালে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তবকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর চুনিয়ারপাড় পর্যন্ত দুটি ব্রিজসহ ৮ কিলোমিটার পাকা সড়ক নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)। এরপর ২০১৭ সালের বন্যায় তবকপুর ইউনিয়নের রসুলপুরে চুনিয়ার পাড় খালের ওপর ব্রিজটির একপাশ ভেঙে পানিতে তলিয়ে থাকায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা। একই সড়কে দুই কিলোমিটার দূরত্বে তবকপুর বড়ুয়া খালের ওপর নির্মিত ব্রিজটিতে ফাটল ধরে ডেবে যাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে চলাচল । ফলে ডেবে যাওয়া ব্রিজে ওপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করা গেলেও পানিতে ভেঙে পড়া ব্রিজ এলাকা পার হতে হয় ড্রামের ভেলায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই সড়কে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় রোগী বা উৎপাদিত পণ্য পরিবহণে ঘুরতে হচ্ছে প্রায় ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার পথ।
উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর চুনিয়ার পাড় গ্রামের শাহজাহান মিয়া বলেন, খুব অসহায় জীবন-যাপন করছি। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে যানবাহনে দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার উপায় নেই। তাছাড়া আমরা এই এলাকার কৃষকরা আমাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারে নিতেও পারছি না।
একই ইউনিয়নের আলমগীর হোসেন বলেন,উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের অন্তত ১০টি গ্রামসহ চিলমারী উপজেলার থানাহাট ও রানীগঞ্জ ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষের সহজ যোগাযোগের পথ ছিল এই সড়কটি। কিন্তু বর্তমানে এসব এলাকার মানুষকে ১৫ থেকে কিলোমিটার পথ বেশি ঘুরতে হচ্ছে।
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার জানান, নতুন করে ব্রিজ দুটি নির্মাণে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে তবকপুর ইউনিয়নের বড়ুয়া এলাকায় ডেবে যাওয়া ৩৬ ফুট ব্রিজের স্থলে ৮০ ফুট ও রসুলপুর চুনিয়ার পাড় এলাকায় পানিতে ভেঙে পড়া ৪৮ ফুট ব্রিজের স্থলে ১৬০ ফুট নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।
মন্তব্য করুন