ডিজিটাল অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে এবং নগদবিহীন লেনদেন জনপ্রিয় করতে রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হলো ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ উদ্যোগ’ কার্যক্রম সম্প্রসারণ বিষয়ক সেমিনার। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরীর কারা ট্রেনিং সেন্টার অডিটোরিয়ামে এ সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। লিড ব্যাংক হিসেবে সহযোগিতা করে ব্র্যাক ব্যাংক।
সেমিনারের শুরুতে কারা ট্রেনিং সেন্টারের সামনে থেকে ‘লেনদেন হচ্ছে ক্যাশলেস, এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ স্লোগানকে সামনে রেখে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। এতে অংশ নেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা, ব্র্যাক ব্যাংকের প্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ বলেন,“ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ক্যাশলেস লেনদেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নগদবিহীন লেনদেন জনপ্রিয় হলে শুধু লেনদেনই সহজ হবে না, দুর্নীতি কমবে, স্বচ্ছতা আসবে এবং মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। রাজশাহীতে এ উদ্যোগকে সফল করতে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক রাফেজা আক্তার কান্তার সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও তারেক রেফাত উল্লাহ খান, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক শরাফত উল্লাহ খান এবং নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান।
বক্তারা বলেন, বিশ্ব এখন দ্রুত ক্যাশলেস লেনদেনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। ইতিমধ্যেই মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, অনলাইন পেমেন্ট, কিউআর কোড ও ডিজিটাল ওয়ালেটের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ সহজেই আর্থিক লেনদেন করছে। তবে এই উদ্যোগকে আরও তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দিতে হলে জনগণকে সচেতন করতে হবে, ব্যাংকিং সুবিধা গ্রামীণ পর্যায়ে আরও সম্প্রসারণ করতে হবে এবং ব্যবসায়ী সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।
সেমিনারে আলোচকরা বলেন, নগদবিহীন অর্থনীতি শুধু নিরাপদ ও স্বচ্ছ লেনদেনই নিশ্চিত করবে না, বরং দেশের অর্থনীতির গতিও বাড়াবে। নগদ অর্থ ব্যবস্থাপনায় যেমন ব্যয় ও ঝুঁকি থাকে, তেমনি নানা অনিয়মও ঘটে। অন্যদিকে ক্যাশলেস লেনদেন সেই ঝুঁকি ও অনিয়ম দূর করবে। এ ছাড়া কর রাজস্ব সংগ্রহ সহজ হবে এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরও ত্বরান্বিত হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে পরিচিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। বাজার, দোকানপাট, পরিবহনসহ দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবহার বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ী সমাজকে সচেতন করার আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী ও সুরক্ষিত করার দিকেও জোর দেন তাঁরা।
দিনব্যাপী এ সেমিনারে রাজশাহীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, ব্যাংকার, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অংশ নেন। উপস্থিত অংশগ্রহণকারীরা মনে করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের এ উদ্যোগ নগদবিহীন অর্থনীতির ভিত্তি তৈরি করবে এবং স্মার্ট বাংলাদেশের পথে এক বড় অগ্রগতি হিসেবে কাজ করবে।#
মন্তব্য করুন