RCTV Logo ‎কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
১২ অগাস্ট ২০২৫, ৬:০৬ অপরাহ্ন

‎তিস্তার ভাঙনে কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে নিঃস্ব শতাধিক পরিবার, হুমকিতে শত শত ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি

ছবিঃ আরসিটিভি

‎কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার তিস্তা নদীবেষ্টিত চরাঞ্চলে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিনের ব্যবধানে শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভিটেমাটি হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজে পাচ্ছে না। ভাঙনের ফলে হুমকির মুখে রয়েছে শত শত বাড়ি, মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং শত শত একর আবাদি জমি। আতঙ্কে তিস্তাপারের মানুষ নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে।

‎খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার থেতরাই, বজরা, গুনাইগাছ ও দলদলিয়া ইউনিয়ন তিস্তা নদী দ্বারা বেষ্টিত। এসব ইউনিয়নের নদী উপকূলীয় চরাঞ্চল পশ্চিম বজরা, পাকার মাথা, উত্তর সাদুয়া দামারহাট, খামার দামারহাট নদীর পশ্চিম পাড়া, সাতালস্কর, চর বজরা, সন্তোষ অভিরাম, কাজিরচক, টিটমা, ঠুটাপাইকার, কর্পুরা, চাপরাপাড় রেডক্রস, লাল মসজিদ ও অর্জুন এলাকায় তীব্র ভাঙন চলছে।

‎তিস্তা নদীর করাল গ্রাসে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ভেঙে যাচ্ছে বসতবাড়ি, আবাদি জমি ও নানা স্থাপনা। অনেকে ইতিমধ্যে বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে, আবার কেউ কেউ অন্যের জমিতে অস্থায়ী ঘর তুলে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে।

‎থেতরাই ইউনিয়নের মজিবর রহমান, আইয়ুব আলী, তৈয়ব আলী ও মর্জিনা বেগম বলেন, “নদীর ভাঙনে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। আবাদি জমি, বাড়িঘর সব নদীতে চলে গেছে। তিস্তা আমাদের সব শেষ করে দিয়েছে।”

‎একই এলাকার আব্দুল মজিদ, মহুবর মিয়া, শফিকুল ও আছিয়া বেওয়া জানান, “তিস্তার ভাঙনে আমরা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছি। অনাহারে-অর্ধাহারে দিন যাচ্ছে। আমরা সাহায্য চাই না, চাই নদী সংস্কার।”

‎চর গোড়াইপিয়ার এলাকার দবির উদ্দিন জানান, “গত কয়েক বছরে আমার বাড়ি ১৫ বার নদীতে বিলীন হয়েছে। এবারও মসজিদসহ বাড়ি নদীতে চলে গেছে। কয়েক দিন ধরে ঠিকভাবে খেতে পাচ্ছি না।”

‎বড় হুমকিতে শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান

‎থেতরাই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আজিজার রহমান জানান, সাম্প্রতিক ভাঙনে শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি এবং শত শত একর আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে চর গোড়াইপিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাম নিয়াসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জুয়ান সতরা চর গোড়াইপিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪টি মসজিদ, ৪টি নুরানি মাদ্রাসা, কয়েক হাজার বাড়ি ও বিপুল ফসলি জমি।

‎উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নয়ন কুমার সাহা জানান, জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে। সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

‎কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, তিস্তা নদীর ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ চলছে। পাশাপাশি নদীশাসনের জন্য বিপুল জিও ব্যাগ ফেলার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দ্রুতই কাজ শুরু হবে।

Facebook Comments Box

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পঞ্চগড়ে সীমান্ত দিয়ে নারী-পুরুষ শিশু সহ ২৩ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ

নির্বাচনকালীন সরকারে থাকছেন না আসিফ মাহমুদ, এনসিপিতে যোগ দেবেন?

উয়েফা সুপার কাপে আজ রাতে পিএসজি বনাম টটেনহ্যাম

বিএনপিতে ‘চমক’ দেখাতে পারেন যারা

ভারতকে এমন শিক্ষা দেব, যা কখনো ভুলবে না: শাহবাজ শরিফ

রাজশাহীতে পদ্মা নদীতে পানি বাড়ছেই, নিম্নাঞ্চলে বন্যা 

লালমনিরহাট সীমান্তে দিয়ে আবারো ৯ জনকে পুশ ইন করেছে ভারত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মালয়েশিয়ার শিক্ষামন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ

আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলেন হিরো আলম

উজানের ঢল ও বৃষ্টিতে কুড়িগ্রামের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি, নিম্নাঞ্চলে বন্যা আশঙ্কা

১০

প্রধান উপদেষ্টাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দিলো ইউকেএম

১১

তিস্তার পানি বিপদ সীমার উপরে,লালমনিরহাটে আবারো বন্যা

১২

‎তিস্তার ভাঙনে কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে নিঃস্ব শতাধিক পরিবার, হুমকিতে শত শত ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি

১৩

গাইবান্ধায় ট্রাক ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে তিন জন 

১৪

ধরলা নদীতে ভেসে আসা ভারতীয় শিশুর মরদেহ উদ্ধার,পতাকা বৈঠকে হস্তান্তর

১৫

সীমান্তে ১৫ বিজিবির অভিযানে ৮২ কেজি গাঁজা জব্দ

১৬

আবারো তিস্তার পানি বৃদ্ধি, নিম্নাঞ্চলে বন্যা আতঙ্ক

১৭

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে জাতীয় যুব দিবস পালিত

১৮

রাজশাহীতে পদ্মার পানি বিপদসীমা ছুঁইছুঁই  চরাঞ্চলে পানিবন্দি মানুষ

১৯

লালমনিরহাটে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস পালিত 

২০