রংপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের পৈতৃক বাসভবনে হামলার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জিজ্ঞাসাবাদের খবরে শুক্রবার (৩১ মে) দিবাগত রাত ১টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানান জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, “রংপুরে ফ্যাসিস্টদের দোসরদের গ্রেপ্তার না করে অভ্যুত্থানের সহযোদ্ধাদের বিব্রত করলে আগামীকাল রংপুরের রাজপথে আবার দেখা হবে। আর আমরা সেখানে সামনের সারিতে থাকব।”
এই স্ট্যাটাসের কিছু সময় পরই, প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও তিনি পায়রা চত্বরে উপস্থিত হয়ে সেনাবাহিনীর ৭২ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুমের সঙ্গে কথা বলেন। পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “জাতীয় পার্টি বিগত ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগকে স্বৈরাচারী রূপে প্রতিষ্ঠিত করতে ভূমিকা রেখেছে। রংপুরে তারা আওয়ামী লীগের সহযোগী হিসেবে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছে।”
সারজিস অভিযোগ করেন, জিএম কাদের গোপন বৈঠকের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর তার দল পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের মতো জাতীয় পার্টিকেও নিষিদ্ধ করা দরকার। তারা অবৈধভাবে নির্বাচিত মেয়র পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করছে, যা ভালো লক্ষণ নয়।”
তিনি আরও বলেন, “জাতীয় পার্টি মিছিল-মিটিং ও আল্টিমেটামের নামে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তাদের সঙ্গে কারা রয়েছে, কারা সমর্থন দিচ্ছে— এসব আগে খুঁজে বের করতে হবে।” একইসঙ্গে তিনি রংপুরের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
এদিকে, সেনাবাহিনীর কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুম সাংবাদিকদের জানান, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের স্বার্থে নিরপেক্ষভাবে কাজ করে যাচ্ছে। রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনা না করে, যারা জনগণের বিরুদ্ধে কাজ করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে।”
তিনি বলেন, “আমাদের অবস্থানকালে কোনো ধ্বংসাত্মক কাজ সহ্য করা হবে না। ভিডিও ফুটেজ ও স্থিরচিত্র দেখে হামলায় লাঠিসহ অংশগ্রহণকারী কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। যাদের হাতে এসব থাকার কথা নয়। সংশ্লিষ্ট নেতারা বিষয়টি বুঝতে পেরে বিব্রত হয়েছেন এবং তারা কথা দিয়েছেন, অভিযুক্তদের হাজির করবেন। আমরা আশা করছি, ভবিষ্যতে এমন কিছু আর ঘটবে না।”
এর আগে, রাত সাড়ে ১১টার দিকে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানায় গিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির রংপুর জেলা সংগঠক আলমগীর রহমান নয়ন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাসহ ১৮ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
মন্তব্য করুন