নতুন অর্থবছরের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) খসড়া চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশন। এডিপির আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা কম। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৮৬ হাজার কোটি টাকা খরচের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নের ৮ হাজার ৫৯৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা যোগ করলে মোট এডিপির আকার দাঁড়াবে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৫৯৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা। বরাদ্দের প্রায় ৭০ শতাংশ পরিবহণসহ পাঁচটি খাতে ব্যয় হবে।
সর্বোচ্চ বরাদ্দপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। অন্যদিকে, সংসদবিষয়ক সচিবালয় সর্বনিম্ন বরাদ্দ পাচ্ছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে খসড়াটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, এডিপির আকার নির্ধারণে বাস্তবায়ন সক্ষমতা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। তবে বরাদ্দের যথাযথ বাস্তবায়ন করতে না পারলে অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে না।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, এবারের বাজেট বাস্তবভিত্তিক এবং উচ্চাভিলাষী নয়। বরাদ্দে বরং অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
প্রধান পাঁচটি খাতের মধ্যে পরিবহণ ও যোগাযোগ খাতে বরাদ্দ ৫৮ হাজার ৯৭৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা (২৫.৬৪%), বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৩২ হাজার ৩৯২ কোটি ২৬ লাখ টাকা (১৪.৮%), শিক্ষা খাতে ২৮ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকা (১২.৪২%), গৃহায়ন ও কমিউনিটি সুবিধা খাতে ২২ হাজার ৭৭৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা (৯.৯%) এবং স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৮ হাজার ১৪৮ কোটি ১৪ লাখ টাকা (৭.৮৯%)।
মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ (৩৬ হাজার ৯৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা)। এরপরেই রয়েছে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
এডিপিতে মোট প্রকল্প সংখ্যা ১১৪৩টি। এর মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প ৯৬৯টি, সমীক্ষা প্রকল্প ১৯টি, কারিগরি সহায়তার ৯৭টি এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নের প্রকল্প ৫৮টি। এছাড়া অনুমোদনহীন প্রকল্প ৯৯০টি এবং পিপিপি প্রকল্প ৭৯টি।
মন্তব্য করুন