নবজাতকের পায়ের গোড়ালি থেকে নেওয়া রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ভবিষ্যতের সম্ভাব্য রোগ শনাক্ত করা সম্ভব—বিশ্বের অনেক দেশেই এই পদ্ধতি সফলভাবে ব্যবহার হচ্ছে। বাংলাদেশে এই প্রক্রিয়া চালু করা গেলে নবজাতকদের বিভিন্ন জটিল রোগ থেকে আগেভাগেই রক্ষা করা যাবে, যা দেশের শিশুস্বাস্থ্য ব্যবস্থায় একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে।
এ বিষয়ে বিশদ আলোচনা হয় বুধবার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ‘সপ্তম আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। শিশু চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিওনেটাল ফোরাম (বিএনএফ) এই সম্মেলনের আয়োজন করে, যারা দেশের নবজাতক বিশেষজ্ঞদের প্রতিনিধিত্ব করে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনএফ-এর সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. মনির হোসেন। প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক এম. কিউ. কে. তালুকদার। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনএফ-এর মহাসচিব অধ্যাপক ডা. সঞ্জয় কুমার দে। এছাড়াও বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারওয়ার বারী।
দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের এবারের প্রতিপাদ্য ছিল—‘সুবিধা এবং বাড়িতে মানসম্পন্ন নবজাতক যত্ন: স্বাস্থ্যকর ভবিষ্যতের পথ’। সম্মেলনে সারাদেশের ৭২১ জন নবজাতক বিশেষজ্ঞসহ চারজন বিদেশি বিশেষজ্ঞ অংশ নেন এবং তারা বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, “নবজাতকের গোড়ালির রক্ত পরীক্ষা করে যদি আগেভাগেই সম্ভাব্য রোগ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি শনাক্ত করা যায়, তাহলে সময়মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ও চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হবে। এতে নবজাতকের কষ্ট যেমন কমবে, তেমনি পরিবারের আর্থিক ব্যয়ও হ্রাস পাবে। সর্বোপরি, একটি সুস্থ ও সুখকর জীবনের পথ প্রশস্ত হবে।”
উদ্বোধনের পর অনুষ্ঠিত হয় একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণী সেশন, যেখানে আলোচনার বিষয় ছিল—‘নবজাতকের গোড়ালির রক্ত পরীক্ষা করে ভবিষ্যৎ রোগ নির্ধারণে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা’।
এই সেশনে ইউনিসেফ বাংলাদেশের ডেপুটি প্রতিনিধি এমা ব্রিগ্রাম, বিএনএফ-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক নাজমুন নাহার এবং সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. সুখময় কংস বণিকসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।
মন্তব্য করুন