বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে ৪৯ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ বাদ দেওয়া হচ্ছে, যা গত ৫০ বছরে কখনো হয়নি। এমনকি করোনা মহামারির সময়েও বরাদ্দ এত বেশি কমানো হয়নি। এর পেছনে পাঁচটি মূল কারণ রয়েছে।
বরাদ্দ কমানোর ৫ কারণ:
অর্থ মন্ত্রণালয় এই বিপুল পরিমাণ বরাদ্দ কমিয়ে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (আরএডিপি) নির্ধারণ করেছে। বর্তমানে পরিকল্পনা কমিশন সেক্টর, মন্ত্রণালয় এবং প্রকল্পভিত্তিক বরাদ্দ ভাগ করার কাজ করছে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “এই অর্থবছরে আমরা চাইছি এডিপি ছোট থাকুক। বড় বরাদ্দ দিয়ে ব্যয় করতে না পারলে সেটি ভালো দেখায় না। বাজেট ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তন আসছে এবং রাজস্ব আদায় কম হওয়ায় বড় ঘাটতি রাখা হচ্ছে না, যাতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকে।”
২০২৪-২৫ অর্থবছরের এডিপি বাস্তবায়ন পরিস্থিতি খুবই নাজুক। ছয় মাসে তিনটি মন্ত্রণালয়—স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাদ্দের ১ শতাংশও খরচ করতে পারেনি। ১৯টি মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন হার ১০ শতাংশের নিচে।
সার্বিকভাবে এডিপির বাস্তবায়ন হার ১৭.৯৭ শতাংশ, যা আগের বছরের একই সময়ের ২২.৪৮ শতাংশের তুলনায় কম। গত কয়েক বছরে এডিপি বাস্তবায়নের হার ধারাবাহিকভাবে কমছে।
পরিকল্পনা সচিব ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন বলেন, “বাস্তবায়ন হার কম কেন, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে সাধারণত এপ্রিলে বেশি অর্থ ব্যয় হয়, তাই শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হার বাড়তে পারে।”
চলতি অর্থবছরের এডিপির মোট বরাদ্দ ছিল ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ কমিয়ে ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা করা হচ্ছে, যেখানে সরকারি তহবিল থেকে ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে ৮১ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অর্থনৈতিক সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের সভাপতি ড. কেএএস মুর্শিদ বলেন, “অর্থ সংকট রয়েছে, তবে কোথায় কাটছাঁট করা হচ্ছে, সেটি গুরুত্বপূর্ণ। গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের বরাদ্দ কমালে অর্থনীতিতে প্রভাব পড়তে পারে। তবে সংশোধিত এডিপির শতভাগ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা জরুরি।”
মন্তব্য করুন