আরসিটিভি ডেস্ক                                    

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২৩৭ আসনে প্রার্থীদের নামের প্রাথমিক তালিকা ঘোষণা করেছে বিএনপি। এ তালিকায় ৩৯ বছর আগে হারানো রংপুরের সংসদীয় ছয়টি আসন পুনরুদ্ধারে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে স্থানীয় ছয় নেতাকে।
রংপুর-১ আসন:
এই আসনে অংশ নেবেন গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের তিনবারের সাবেক চেয়ারম্যান এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ সদস্য মোকাররম হোসেন সুজন।
গঙ্গাচড়া ও সিটি করপোরেশনের ১ থেকে ৮ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত রংপুর-১ আসন। স্বাধীনতার পর ১৯৭৯ সালে বিএনপির প্রার্থী মশিউর রহমান যাদু এই আসনে জয়লাভ করেন। পরে তার মৃত্যুতে ছেলে শফিকুল গনি স্বপন উপনির্বাচনে ওই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এবার ৪০ বছর পর হারানো এই আসনটি উদ্ধারে একাধিক নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশা করলে দল থেকে মোকাররম হোসেন সুজনকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
রংপুর-২ আসন:
এই আসনে লড়বেন সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকার। তিনি ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন ইসলামী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের হয়ে লাঙ্গল প্রতীকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে ভোট করেছিলেন, পরে বিএনপিতে যোগ দেন।
জেলার বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ উপজেলা নিয়ে রংপুর-২ আসন গঠিত। ১৯৭৯ সালে এই আসনে বিএনপি প্রার্থী মোহম্মদ ইলিয়াছ বিজয়ী হন। এবার এই আসনে আশার আলো দেখছে বিএনপি।
রংপুর-৩ আসন:
এই আসনে ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করবেন সামসুজ্জামান সামু। তিনি রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক। রংপুর সিটি করপোরেশনের ৯ থেকে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড ও সদর উপজেলার পাঁচ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত রংপুর-৩ আসন। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে এই আসনে বিএনপি শুধু একবার জয় পেয়েছে। তাও আবার ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে। এখানে ধানের শীষ প্রতীকে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন অ্যাডভোকেট রেজাউল হক সরকার রানা।
রংপুর-৪ আসন:
এই আসনে থেকে লড়বেন কাউনিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি শিল্পপতি এমদাদুল হক ভরসা। তার মাধ্যমে এবার হারানো আসনটি উদ্ধারে সুবর্ণ সুযোগ দেখছেন বিএনপি।
কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলা নিয়ে গঠিত রংপুর-৪ আসন। ১৯৭৯ সালে এই আসনে বিএনপি প্রার্থী শিল্পপতি রহিম উদ্দিন ভরসা জয় পেয়েছিল। এ ছাড়া, বাকি নির্বাচনগুলোতে জেলার অন্যান্য আসনগুলোর মতো এখানে কোমর সোজা করতে পারেনি বিএনপি।
রংপুর-৫ আসন:
এই আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে মিঠাপুকুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক গোলাম রব্বানীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী অধ্যুষিত এ আসনটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন সাধারণ ভোটাররা।
মিঠাপুকুর উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত রংপুর-৫ আসন। স্বাধীনতার পর অধিকাংশ সময় এই আসন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির দখলে ছিল। বিএনপি থেকে ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার গোলাম মোস্তফা বাটুল একবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিল। এবার সেই হারানো আসন পুনরুদ্ধারে চমক দেখাতে চান অধ্যাপক গোলাম রব্বানী।
রংপুর-৬ আসন:
এই আসনে নির্বাচন করবেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম। এ আসনে দীর্ঘদিন ধরে তিনি প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। জামায়াতে ইসলামী ছাড়া অন্য দলের প্রার্থীদের তেমন তৎপরতা নেই।
পীরগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসন-৬। এই আসনে রয়েছে ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা। নানা কারণে এ আসনটি রংপুর অঞ্চলের মধ্যে বেশ আলোচিত। দল গঠনের পর থেকে টানা দুই দশক আসনটি দখলে ছিল জাতীয় পার্টির। এরপর ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের দখলে ছিল এই আসন। এই আসনেও বিএনপি শুধু একবারই বিজয়ী হয়েছিল। ১৯৭৯ সালের নির্বচানে এখানে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন মতিয়ার রহমান চৌধুরী।
মন্তব্য করুন