আন্তর্জাতিক ডেস্ক 

ফিলিস্তিনের গাজায় গত ১০ অক্টোবর শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি এখন পর্যন্ত অন্তত ১৯৪ বার চুক্তি ভঙ্গ করেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। রোববার (২ নভেম্বর) এমন অভিযোগ তুলেছে ফিলিস্তিনের সরকারি মিডিয়া অফিস।
সংস্থাটির পরিচালক ইসমাইল আল-থাওয়াবতেহ বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, এসব লঙ্ঘনের মধ্যে রয়েছে তথাকথিত ‘হলুদ রেখা’ অতিক্রম করে সামরিক অনুপ্রবেশ, গুলি ও গোলাবর্ষণ, বিমান হামলা, ধ্বংসযজ্ঞ এবং চিকিৎসা সামগ্রী, ওষুধ, তাঁবু ও মোবাইল হোম গাজায় প্রবেশে বাধা দেওয়া।
থাওয়াবতেহ বলেন, ‘চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর থেকে দখলদার বাহিনী ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ১৯৪টি বার এটি লঙ্ঘন করেছে। আমরা আশা করেছিলাম এই চুক্তি কিছুটা স্বস্তি বয়ে আনবে, কিন্তু তা হয়নি।’
তিনি আরও জানান, তাদের অফিস এই লঙ্ঘনের বিষয়ে প্রতিদিন আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের কাছে প্রতিবেদন জমা দিচ্ছে।
ইসরাইলি বাহিনী বারবার ‘হলুদ রেখা’ অতিক্রম করে আবাসিক এলাকায় যানবাহন পাঠাচ্ছে, বেসামরিক এলাকায় হামলা চালাচ্ছে এবং এসব হামলায় বহু মানুষ হতাহত হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
ফিলিস্তিনিদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা দিয়ে থাওয়াবতেহ বলেন, ‘হলুদ রেখা’র কাছাকাছি যাওয়া বিপজ্জনক, কারণ ইসরাইল আগেও কোনো সতর্কতা ছাড়াই সেখানে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করেছে।
মিডিয়া অফিস জানায়, যুদ্ধবিরতি প্রোটোকলে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা মৃতদেহ উদ্ধারের জন্য শত শত ভারি যন্ত্রপাতি প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তা বাস্তবায়িত হয়নি; কেবল ইসরাইলি বন্দিদের লাশ উদ্ধারের জন্য সীমিত কিছু যন্ত্রপাতি প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ইসরাইলি গণমাধ্যমের উদ্ধৃত দিয়ে অফিস জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো প্রায় ৯,৫০০ ফিলিস্তিনি নিখোঁজ বা নিহত অবস্থায় পড়ে আছেন। প্রোটোকলে বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর জন্য ৩ লাখের বেশি তাঁবু ও মোবাইল হোম প্রবেশের কথাও বলা হয়েছিল, কিন্তু ইসরাইল তা কার্যকর করেনি। ফলে প্রায় ২ লাখ ৮৮ হাজার ফিলিস্তিনি পরিবার এখন রাস্তায় বা উন্মুক্ত স্থানে বসবাস করছে।
গাজা সরকারের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ভূখণ্ডের প্রায় ৯০ শতাংশ বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করেছে দখলদার বাহিনী, যার ফলে প্রাথমিকভাবে প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে।
থাওয়াবতেহ অভিযোগ করেন, ইসরাইল ইচ্ছাকৃতভাবে মানবিক সংকট আরও তীব্র করছে এবং রাফাহ সীমান্তে মিশরের দিকে ছয় হাজারের বেশি ত্রাণবাহী ট্রাক আটকে রেখেছে।
মন্তব্য করুন