স্পোর্টস ডেস্ক 

আগামী বছর উত্তর আমেরিকায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ফুটবল বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে খেলার আশা করছেন লিওনেল মেসি। যদিও তিনি জানালেন, সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে শরীরের অবস্থা কেমন থাকে, সেটাই হবে চূড়ান্ত নির্ধারক।
এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মেসি বলেন, “বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাওয়া এক অসাধারণ বিষয়, এবং আমি অবশ্যই খেলতে চাই। তবে বয়সও একটা বড় বিষয়, আগামী জুনে আমার বয়স হবে ৩৯।
মেসি আরও বলেন, “আমি সেখানে থাকতে চাই, ভালোভাবে প্রস্তুত থাকতে চাই এবং যদি খেলি, তাহলে দলকে সাহায্য করার মতো অবস্থায় থাকতে চাই। আগামী বছর ইন্টার মায়ামির সঙ্গে প্রাক-মৌসুম শুরু করার পর প্রতিদিন শরীরের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করব। যদি মনে হয় আমি ১০০ শতাংশ দিতে পারব এবং জাতীয় দলের জন্য কার্যকর হতে পারব, তাহলে সিদ্ধান্ত নেব। অবশ্যই আমি খুব উৎসুক, কারণ এটা বিশ্বকাপ। আমরা আগের বিশ্বকাপটা জিতেছি, আর মাঠে নেমে সেটা আবার রক্ষা করার সুযোগ পাওয়া দারুণ ব্যাপার। জাতীয় দলের হয়ে খেলা সবসময় স্বপ্ন, বিশেষ করে এমন বড় প্রতিযোগিতায়।”
২০০৪ সালে পেশাদার ফুটবলে অভিষেক হয় মেসির। সে বছর মাত্র ১৭ বছর বয়সে বার্সেলোনার হয়ে লা লিগায় প্রথম ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি, যা তাকে ক্লাবটির ইতিহাসে সেই সময়ের সবচেয়ে কমবয়সী খেলোয়াড় বানায়। ২০২১ সালে বার্সেলোনার আর্থিক সংকটের কারণে দল ছাড়তে হয় তাকে। এরপর তিনি যোগ দেন ফরাসি ক্লাব প্যারিস সাঁ জার্মেইনে (পিএসজি)। দুই মৌসুম পর ২০২৩ সালে তিনি পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে, মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেন।
মায়ামিতে জীবন নিয়ে মেসি বলেন, “এখানে জীবনটা সত্যিই আমার ভালো লাগে। বার্সেলোনায় আমি অনেক সময় কাটিয়েছি- অসাধারণ শহর, যেখানে বড় হয়েছি, অসংখ্য সুন্দর মুহূর্ত কেটেছে, এখনো সেই জায়গাকে ভীষণ মিস করি। তবে মায়ামিও দারুণ একটি শহর, এখানে জীবন উপভোগ করা যায়, নির্ভার থাকা যায়, বাচ্চারাও স্বাধীনভাবে থাকতে পারে।”
ক্লাব পর্যায়ে অগণিত সাফল্যের পর জাতীয় দলের হয়ে মেসির বড় অর্জন আসে ২০২২ সালে। সেই বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ফাইনালে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে ৪–২ ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়। মেসি পান টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার- গোল্ডেন বল। ১৯৮৬ সালের পর এটিই ছিল আর্জেন্টিনার প্রথম বিশ্বকাপ জয়। ২০০৫ সালে জাতীয় দলে অভিষেকের পর থেকে মেসি এখন পর্যন্ত ১৯৫ ম্যাচে ১১৪ গোল করেছেন।
বিশ্বকাপ জয়ের সেই মুহূর্তকে জীবনের সবচেয়ে বড় স্বপ্নপূরণ বলে উল্লেখ করে মেসি বলেন, “ওটা ছিল আমার জীবনের স্বপ্ন। সত্যি বলতে, এটিই ছিল পেশাদার জীবনে আমার একমাত্র অপূর্ণতা। বার্সেলোনার হয়ে আমি যা কিছু জিতেছি, জাতীয় দলেও সব কিছু অর্জন করতে চেয়েছিলাম। প্রতিটি ফুটবলারেরই তো সবচেয়ে বড় স্বপ্ন- বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া।”
মন্তব্য করুন