RCTV Logo বিনোদন ডেস্ক
২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৪৯ অপরাহ্ন

লোকসংগীতকে গ্রাম থেকে শহরে এনে সর্বজনীন করে তোলেন আব্বাসউদ্দীন

ছবিঃ সংগৃহীত

‘আমার হাড় কালা করলাম রে’, ‘আল্লাহ মেঘ দে পানি দে’, ‘ওকি গাড়িয়াল ভাই’, ‘আগে জানলে তোর ভাংগা নৌকায় উঠতাম না’-এর মতো জনপ্রিয় গানগুলো যার কণ্ঠে ভর করে গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল তিনি হলেন আব্বাসউদ্দীন আহমদ। বাংলা সংগীতকে নিয়ে গিয়েছিলেন এক অনন্য উচ্চতায়। ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালী এবং ইসলামি গানে দরদভরা কণ্ঠস্বর শ্রোতাদের মুগ্ধ করে রাখে। লোকসংগীতকে গ্রাম থেকে শহরে এনে সর্বজনীন করে তোলার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।

১৯০১ সালের ২৭ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার বলরামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আব্বাসউদ্দীন। আজ ১২৫তম জন্মবার্ষিকী তার। প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি অর্জনের চেয়েও গানের প্রতি ছিল তাঁর প্রবল আকর্ষণ। গানের জগতে তাঁর কোনো ওস্তাদের প্রথাগত তালিম ছিল না। লোকযাত্রা, থিয়েটার এবং স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুনে শুনেই তিনি গান গাওয়ার কৌশল আয়ত্ত করেন। অল্প কিছু দিনের জন্য তিনি ওস্তাদ জমিরউদ্দীন খাঁর কাছে উচ্চাঙ্গসংগীতের তালিম নিয়েছিলেন।

কলকাতায় এসে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের অনুপ্রেরণা ও সাহচর্য তাঁর শিল্পীজীবনে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। নজরুলের সহায়তায় তিনি গ্রামোফোনে গান রেকর্ড করেন। তাঁর রেকর্ড করা প্রথম গান ‘কোন বিরহীর নয়নজলে বাদল ঝরে গো’। গানের রেকর্ড বাজারে আসার সাথে সাথেই বিপুল সাড়া ফেলে। চারদিকে তখন আব্বাসউদ্দীনকে নিয়ে আলোচনা। সংগীতজীবনে তিনি শ্রোতাদের উপহার দিয়েছেন প্রায় সাত শতাধিক গান। লোকসংগীতের সম্রাট আব্বাসউদ্দীন মূলত রংপুর ও কোচবিহার অঞ্চলের ভাওয়াইয়া গানের জন্য বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। তাঁর সুরেলা কণ্ঠে ভাওয়াইয়া, ক্ষীরোল-চটকা, জারি, সারি, ভাটিয়ালি, মুর্শিদি, বিচ্ছেদি, দেহতত্ত্ব, মর্সিয়াসহ পল্লীগীতি গানে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছিল।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, জসীমউদ্দীন, গোলাম মোস্তফা রচিত ইসলামী ভাবধারার গানে কণ্ঠ দিয়ে মুসলিম সমাজে সংগীতের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করেন। ‘রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশীর ঈদ’,‘তোরা দেখে যা আমিনা মায়ের কোলে’, ‘শোন শোন ইয়া ইলাহী’, ‘খোদা এই গরীবের শোন মোনাজাত’, ‘ত্রিভূবনের প্রিয় মোহাম্মদ’-এর মতো কালজয়ী ইসলামি গানগুলো এখনও তুমুল জনপ্রিয়।

সংগীতের পাশাপাশি একগুচ্ছ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন আব্বাসউদ্দীন আহমদ। ‘বিষ্ণুমায়া’ (১৯৩২), ‘মহানিশা’ (১৯৩৬), ‘একটি কথা’ এবং ‘ঠিকাদার’ (১৯৪০) সহ বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে দেখা যায় তাঁকে।
সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি মরণোত্তর প্রাইড অব পারফরমেন্স, শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার এবং স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারসহ একাধিক পুরস্কারে ভূষিত হন। ১৯৫৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর এই কিংবদন্তী শিল্পীর জীবনাবসান ঘটে।

 

Facebook Comments Box

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কুড়িগ্রামে কচাকাটাকে উপজেলা ঘোষণার দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি

এআই এত কনফিউজড কেন?

লোকসংগীতকে গ্রাম থেকে শহরে এনে সর্বজনীন করে তোলেন আব্বাসউদ্দীন

যখন তখন কফি খাওয়া কি ঠিক

এমবাপে-বেলিংহামের গোলে এল ক্লাসিকোতে রিয়ালের দাপুটে জয়

সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে গিয়ে রাবি ছাত্রীর মৃত্যু

উত্তরা ইপিজেড এর ৪ টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা 

শক্তি বাড়াচ্ছে ঘূর্ণিঝড় মন্থা, বাতাসের গতিবেগ এখন ঘণ্টায় ৮৮ কিমি!

মেট্রোরেল দুর্ঘটনায় নিহত আবুল কালামের দাফন সম্পন্ন

আজ ২৭ অক্টোবর, দিনটি কেমন যাবে আপনার?

১০

‎উজানের ঢলে মৎস্য উদ্যোক্তা আবু বকর সিদ্দিকের স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্ন

১১

‎জীবন রক্ষাসহ ৫দফা দাবিতে কুড়িগ্রামে মানববন্ধন

১২

প্রায় আড়াই ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর উত্তরা-আগারগাঁও পথে মেট্রো চলাচল শুরু

১৩

জনপ্রিয় লেখক ও আণবিক বিজ্ঞানী রেজাউর রহমান আর নেই

১৪

​কৃত্রিম সংকটে নন-ইউরিয়া সার, চরম বিপাকে লালমনিরহাটের কৃষকরা

১৫

সালমান হত্যা মামলা, পাওয়া যাচ্ছে না সামিরা-ডনকে

১৬

একজনের নামে সর্বোচ্চ ৭টি সিম নিবন্ধন, ভোটের আগে বাস্তবায়ন

১৭

ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পথচারী নিহত

১৮

সাগরে গভীর নিম্নচাপ, ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আভাস

১৯

রাজশাহী রেলওয়ে হাসপাতালে ১০ টাকায় চিকিৎসা পাবে রোগীরা

২০