হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সিনিয়র সদস্য মোহাম্মদ নাজ্জাল জানিয়েছেন, গাজায় ১৫ মাসের দীর্ঘ আগ্রাসনের পরও ইসরাইল তার সামরিক লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার পথ বেছে নিতে হয়েছে।
ইসরাইল এই যুদ্ধে তিনটি মূল লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল:
মোহাম্মদ নাজ্জাল বলেন, ইসরাইল এই লক্ষ্যগুলো অর্জনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। সামরিক অভিযানের মাধ্যমে বন্দিদের মুক্ত করতে না পেরে, শেষমেশ আলোচনা ও সমঝোতার পথে আসতে হয়েছে।
রোববার যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে প্রথম পর্যায়ের বন্দি বিনিময়ে ৩ জন ইসরাইলি জিম্মি ও ৯০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। মোহাম্মদ নাজ্জালের মতে, কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় ধরে এই আলোচনায় মধ্যস্থতা করেছে। তিনি বিশেষভাবে তুরস্কের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন এবং বলেন, “তুরস্কের অবদান ছাড়া এই চুক্তি সম্ভব হতো না।”
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজার ফিলাডেলফি করিডোরে ইসরাইলি বাহিনীর উপস্থিতি বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। হামাস নেতা নাজ্জাল এই পদক্ষেপকে ইসরাইলের “ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা” বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন, হামাসের মূল লক্ষ্য গাজা থেকে ইসরাইলি সেনাদের সম্পূর্ণ অপসারণ।
গাজার শাসন পরিচালনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গাজায় একটি প্রযুক্তি-কেন্দ্রিক প্রশাসন গঠনের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যেখানে সব ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী অংশ নেবে।
হামাস নেতা বলেন, “আমরা গাজার একচ্ছত্র শাসন দাবি করছি না। বরং একটি টেকনোক্রেট দল তৈরি করে গাজার পুনর্গঠনে কাজ করব।” তিনি বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে গাজাকে পুনর্গঠনের ওপর জোর দেন।
মোহাম্মদ নাজ্জাল সতর্ক করে বলেন, “ইসরাইল যদি চুক্তি লঙ্ঘন করে, তবে হামাসও বসে থাকবে না। আমরা সব পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত।” তিনি জানান, হামাস যুদ্ধবিরতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকলেও ইসরাইলের আক্রমণের কোনো ইঙ্গিত পেলে উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া জানাবে।
হামাসের এই সিনিয়র কর্মকর্তার বক্তব্যে গাজার ভবিষ্যৎ, ফিলিস্তিনের রাজনীতি এবং গাজার পুনর্গঠনের জন্য বহুপাক্ষিক আলোচনার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।
মন্তব্য করুন