গত তিনদিন ধরে উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতে কুড়িগ্রামের প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানিও।
এরই মধ্যে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। ডুবে যাচ্ছে অনেক নিচু এলাকার ফসলি জমি। নাগেশ্বরী উপজেলার দুধকুমার নদের অববাহিকার বিভিন্ন চরাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। ফাঁন্দের চর, নুচনি, ধাউরারকুটি চরসহ কয়েকটি চরাঞ্চল আংশিক প্লাবিত হয়েছে।
ফাঁন্দের চর এলাকার কৃষক আবুল হোসেন বলেন, গত দুইদিন থেকে নদীর পানি বাড়ছে। আমার বেশ কিছু ধান-পাটক্ষেত ডুবে গেছে। আজ সারাদিন বৃষ্টি হয়েছে। পানি যদি আরেকটু বাড়ে তাহলে তা বাড়িঘরে প্রবেশ করবে।
একই উপজেলার ধাউরারকুটি গ্রামের বাসিন্দা জালাল উদ্দিন জানান, আমাদের এলাকার কিছু বাড়িতে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। সকালে যেখানে পানি ছিল না, বিকেলে সেই জায়গাগুলো তলিয়ে গেছে।
এদিকে ফুলবাড়ি উপজেলার চর গোরক মণ্ডপ আনন্দ বাজার এলাকায় ধরলা নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। স্থানীয় আজিজুল হক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সকাল থেকে ধরলা নদীর পানি বাড়ছে। পানি বৃদ্ধির কারণে প্রচণ্ড ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমরা বারবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কাছে অভিযোগ করলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
কুড়িগ্রাম রাজাহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, চলমান বৃষ্টিপাত আগামীকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। তবে আগামীকালকের পর থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আবদুল মতিন বলেন, ইতোমধ্যে প্রতি উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত শুকনো খাবার মজুদ রাখা হয়েছে এবং ভলান্টিয়ারদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার বিভিন্ন স্থানে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে।
মন্তব্য করুন