গতকাল ৭ সেপ্টেম্বর ছিল ডাকসু নির্বাচনের প্রচারণার শেষ দিন। সে সময় শেষ। এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অপেক্ষায় আছে ডাকসু নির্বাচনের। আগামীকাল মঙ্গলবার ভোটের দিন।
ছয় বছর পর আবারও ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রজন্মের অনেকের কাছেই এটি প্রথম নির্বাচন। ফলে এই নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাস এখন সরগরম।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৮টি কেন্দ্রের ৮১০টি বুথে ভোটগ্রহণ হবে। মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২০ হাজার ৮৭৩ এবং ছাত্রী ১৮ হাজার ৯০২ জন। ২৮টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ৪৭১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে নারী প্রার্থী আছেন ৬২ জন।
এবার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরাও প্রথমবারের মতো ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন। সহযোগী রিটার্নিং কর্মকর্তা শারমীন কবীর বলেন, ‘যেসব শিক্ষার্থীর দৃষ্টিপ্রতিবন্ধকতা রয়েছে এবং যারা ব্রেইল পড়তে পারেন, তাদের জন্য আমরা ব্রেইল পদ্ধতিতে ব্যালট পেপার ছাপিয়েছি।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ঢাবি প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্যদিকে নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও অনিয়ম রোধে শিক্ষক সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংক (ইউটিএল) ১০টি প্রস্তাব দিয়েছে। আর শিক্ষক নেটওয়ার্ক সংবাদ সম্মেলন করে অনিয়মের আশঙ্কা জানিয়ে ১০ দফা দাবি জানিয়েছে।
ডাকসু নির্বাচন ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আজ সোমবার বিকেল থেকে ঢাবি মেট্রো স্টেশন বন্ধ থাকবে। রাত ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রবেশপথও বন্ধ থাকবে। বৈধ আইডি কার্ডধারী শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কেবল প্রবেশ করতে পারবেন।
এবারের নির্বাচন ঘিরে কিছু নাটকীয় ঘটনাও ঘটেছে। এক ভিপি প্রার্থী সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হলের ভিপিপ্রার্থী মাসুম বিল্লাল শেষ সময়ে সরে গিয়ে বলেন, ‘আমি আমার অবস্থান থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। আমি স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়িয়েছি। আমি জানি কর্মীর চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ।’
এদিকে কয়েকটি জরিপে শিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট এগিয়ে রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। তবে অন্য প্রার্থীরা বলছেন, এসব জরিপ একপক্ষীয় এবং ভোটারদের প্রভাবিত করতে করা হয়েছে। ছাত্রলীগ এবার নিষিদ্ধ থাকায় নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। এর ফলে নির্বাচনী পরিবেশ অন্য রকম হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, দীর্ঘ সময় পর ডাকসু নির্বাচন হওয়ায় তাদের মধ্যে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে।
মন্তব্য করুন