তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে রাজনৈতিক দল ও ছয় ব্যক্তির করা চারটি আবেদনের শুনানি আজ বুধবার (২৭ আগস্ট) অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাত সদস্যের বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হবে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। এরপর আদালত আজকের দিন পুনঃশুনানির জন্য নির্ধারণ করে।
২০১১ সালের ৬ এপ্রিল আপিল বিভাগের শুনানি শেষে বিষয়টি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়। একই বছরের ১০ মে আদালত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেন। তবে আদালত মত দিয়েছিল, দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে এবং প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনে সংসদে ঐকমত্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ রায় দেন।
চলতি বছরের ২৫ আগস্ট সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজ উদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করেন। তাদের পক্ষে অ্যাডভোকেট শরীফ ভূঁইয়া ও ব্যারিস্টার তানিম হোসেন শাওন আবেদন দাখিল করেন।
এরপর ১৬ অক্টোবর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পক্ষে আরেকটি রিভিউ আবেদন করেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। সর্বশেষ ২৩ অক্টোবর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি রিভিউ আবেদন দাখিল করে। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এ আবেদন করেন বলে জানান দলের আইনজীবী শিশির মনির।
প্রসঙ্গত, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে পাস হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তিন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ৪ আগস্ট হাইকোর্ট রিট খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে।
পরে ২০০৫ সালে আপিলে রিটকারীরা আবার মামলাটি উত্থাপন করেন। আদালত এ মামলায় আটজন অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ করে। তাদের মধ্যে ড. কামাল হোসেন, টিএইচ খান, মাহমুদুল ইসলাম, ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম ও রোকনউদ্দিন মাহমুদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে মত দেন। ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি এর বিরোধিতা করেন, আর ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক ও ড. এম জহির আমূল সংস্কারের প্রস্তাব দেন। তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমও তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখার পক্ষে মত দেন।
মন্তব্য করুন