গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচপীর বাজার থেকে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা সদর সড়কের সংযোগকারী তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ অবশেষে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুর ১২টায় এই সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
সেতু উদ্বোধনের খবরে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ ও কুড়িগ্রামের চিলমারীসহ আশপাশের অঞ্চলে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। তিস্তার দুই পাড়ের মানুষ বহুদিনের স্বপ্নপূরণের আনন্দে মেতে উঠেছেন। সর্বত্র চলছে সাজ-সাজ রব, স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সবাই সেতু উদ্বোধনকে ঘিরে উচ্ছ্বাসে ভাসছেন।
মওলানা ভাসানী সেতুর মাধ্যমে গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের সুবিধা তৈরি হবে। এতে যাতায়াতের সময় ও খরচ উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাবে। শিল্প ও কৃষিজাত পণ্য পরিবহন সহজতর হওয়ায় স্থানীয় অর্থনীতি চাঙ্গা হবে এবং ছোট ও মাঝারি শিল্প-কারখানা স্থাপনের সুযোগ তৈরি হবে।
এছাড়া সেতুর মাধ্যমে নদীর উভয় তীরের মধ্যে উন্নত সড়ক নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা হবে, যা ওই অঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রসার ও উন্নয়নে অবদান রাখবে। কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। একই সঙ্গে পর্যটনেরও বিকাশ ঘটবে, যা জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
সেতুটি চালু হলে ভুরুঙ্গামারী স্থলবন্দরসহ কুড়িগ্রাম জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ সহজ হবে। এতে দূরত্ব কমবে প্রায় ৪০ থেকে ৬০ কিলোমিটার, যা উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতি ও বাণিজ্যে নতুন গতি সঞ্চার করবে।
‘মওলানা ভাসানী সেতু’টি একটি প্রি-স্ট্রেসড কংক্রিট গার্ডার সেতু। সেতুটির দৈর্ঘ্য ১,৪৯০ মিটার, প্রস্থ ৯.৬০ মিটার, লেন সংখ্যা দুটি এবং মোট স্প্যান ৩১টি। আধুনিক প্রকৌশল কৌশলে নির্মিত এই সেতুটি তিস্তার বুকে এক অনন্য দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকবে।
বাংলাদেশ সরকার (জিওবি), সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ওফিড)-এর যৌথ অর্থায়নে নির্মিত সেতুটির মোট ব্যয় হয়েছে প্রায় ৯২৫ কোটি টাকা।
মন্তব্য করুন