কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের আজমাতা হুরকাটারী গ্রামে তুচ্ছ ঘটনায় শিশু, নারী, বৃদ্ধ এবং স্বাক্ষীসহ অন্তত চারজনকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় দুটি পৃথক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনায় গুরুতর আহত এক বৃদ্ধ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে হত্যার হুমকিরও অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ জুলাই সকাল ১১টার দিকে আজমাতা হুরকাটারী গ্রামের তহর উদ্দিনের ছয় বছর বয়সী নাতি সাখাওয়াত হোসেন ও প্রতিবেশী মোখলেছুর রহমানের ছেলে যুবক আশরাফুল আলম খেলার সময় একে অপরকে উদ্দেশ্য করে থুথু ছিটায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আশরাফুল শিশু সাখাওয়াতকে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে।
শিশুটির কান্না শুনে দৌড়ে আসেন তার নানী। তিনি প্রতিবাদ করলে তাকেও মারধরের শিকার হতে হয়। নানী বিষয়টি জানালে তহর উদ্দিন স্ত্রীকে বকাঝকা করে বলেন, “ছেলের সাথে বিবাদে না জড়ানোর জন্য”। কিন্তু তাতেও ক্ষান্ত হননি আশরাফুল। পরে তিনি রাগে ক্ষোভে নিজে এসে বৃদ্ধ তহর উদ্দিনকে প্রকাশ্য দিবালোকে বেধড়ক মারধর করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।
স্থানীয়রা জানান, আশরাফুলের মারধরের ফলে তহর উদ্দিন গুরুতর জখম হন। রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরে একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং বয়সজনিত কারণে অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ।
আহতের পরিবারের পক্ষ থেকে ৩০ জুলাই নাগেশ্বরী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। স্বাক্ষী হিসেবে আল-আমিন ইসলাম নামের একজন প্রতিবেশীও পৃথকভাবে অভিযোগ করেন। পুলিশ অভিযোগ পেয়ে একইদিন ঘটনাস্থলে তদন্তে যায়।
তবে আশ্চর্যজনকভাবে পুলিশ ফিরে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই অভিযুক্ত আশরাফুল, আতাউর রহমান, মাছুম বিল্লা ও মানু মিয়া মিলে আবারও হামলা চালায়। তারা এবার বৃদ্ধ তহর উদ্দিনের স্ত্রী ও স্বাক্ষী আল-আমিন ইসলামের ওপর অতর্কিতে হামলা চালিয়ে মারধর করে। এতে পরিবারটির মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
সংবাদ সংগ্রহের জন্য সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে অভিযুক্ত আশরাফুলকে একবার দেখা গেলেও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। পরে তার বাড়িতে গেলে তার মা জানান, “আশরাফুল বাড়িতে নেই, কোথায় গেছে জানি না।”
নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল করিম রেজা বলেন, আমরা দুটি পৃথক অভিযোগ পেয়েছি। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা চলছে। যদি কোনো পক্ষ মীমাংসা না করে, তবে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে আদালতে প্রসিকিউশন পাঠানো হবে।
মন্তব্য করুন