চলতি সপ্তাহে তুরস্কে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যেই ইউক্রেনের সঙ্গে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে না নিলে রাশিয়াকে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইউরোপীয় নেতারা।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি শান্তি আলোচনায় বসতে সম্মতি জানিয়েছেন। রোববার তিনি জানান, তিনি তুরস্কে যাচ্ছেন এবং বৃহস্পতিবার ইস্তাম্বুলে পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
বৈঠকের আগে ইউক্রেন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় নেতারা তাদের নিজ নিজ কৌশল নির্ধারণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তুরস্কের মধ্যস্থতায় আয়োজিত এই বৈঠক যুদ্ধের কূটনৈতিক সমাধানে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউক্রেন একমাসের যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে বলেছে, এটি সরাসরি শান্তি আলোচনার পূর্বশর্ত। ইউরোপীয় নেতারা সোমবারের মধ্যে রাশিয়াকে তাদের অবস্থান পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন।
জার্মান সরকারের মুখপাত্র স্টেফান কর্নেলিয়াস এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন:
“ঘড়ির কাঁটা টিকটিক করছে। সোমবারের শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার কাছে সময় রয়েছে। এরপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে আমরা আর দ্বিধা করব না।”
তবে রাশিয়া এই আল্টিমেটাম প্রত্যাখ্যান করেছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন:
“আল্টিমেটামের ভাষা আমাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য। তবে আমরা যুদ্ধের কূটনৈতিক সমাধানে আন্তরিক আলোচনা করতে প্রস্তুত।”
এদিকে, ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন প্রকাশ ও সামরিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করতে ইউরোপের পাঁচটি প্রধান সামরিক শক্তির প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা শুক্রবার ইতালিতে বৈঠকে বসবেন। ইতালির প্রতিরক্ষামন্ত্রী গুইডো ক্রোসেটো বলেছেন,
“ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি ও পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা এই বৈঠকে যোগ দেবেন। সেখানে ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা হবে।”
ইউরোপের কঠোর হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও রাশিয়া তাদের অবস্থানে অটল। রুশ মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন,
“আমরা সংঘাত সমাধানে শান্তিপূর্ণ আলোচনা করতে চাই। কিন্তু চাপ বা হুমকির মাধ্যমে আমাদের অবস্থান পরিবর্তন করা হবে না।”
তুরস্কের মধ্যস্থতায় আয়োজিত এই বৈঠক থেকে কী ফলাফল আসবে, তা নিয়ে বিশ্বজুড়ে চলছে জল্পনা। ইউরোপ রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়াচ্ছে, আর রাশিয়া নিজেদের অবস্থান শক্ত রেখে আলোচনায় বসতে আগ্রহী।
এই বৈঠক থেকে বাস্তব কোনো সমাধান আসবে নাকি উত্তেজনা আরও বাড়বে, তা এখনো অনিশ্চিত। তবে ইউক্রেন, রাশিয়া ও ইউরোপের কৌশলগত অবস্থান এই সংঘাতের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.