আজকাল হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি তরুণদের মধ্যেও বেড়ে গেছে। বয়স যেন আর কোনো বিষয়ই নয়, কারণ সঠিক জীবনযাপন না করলে ২০ বছরের একজন তরুণেরও হার্ট দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। সম্প্রতি ব্রিটেনের নরউইচের ইউনিভার্সিটি অফ অ্যাঙ্গলিয়া-র গবেষণায় উঠে এসেছে চমকপ্রদ কিছু তথ্য, যা আমাদের হৃদযন্ত্রের জন্য উদ্বেগজনক।
গবেষকরা জানিয়েছেন, যদি আমরা শারীরিক অসুস্থতা বা অতিরিক্ত স্থূলতার মধ্যে থাকি, তবে আমাদের হার্ট দ্রুত ‘বৃদ্ধ’ হতে শুরু করে। এমনকি যদি রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে যায় বা শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায়, তবে হৃদযন্ত্রের কর্মক্ষমতা কমে যায় এবং তার ‘ফাংশনাল এজ’ বাড়তে থাকে। এর ফলে, ২০ বছরের একজন তরুণও কখনোই জানতেও পারে না যে তার হার্ট ইতিমধ্যেই দুর্বল হয়ে গেছে এবং হঠাৎ করেই তাকে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
গবেষণার জন্য ৫৫৭ জন ব্যক্তিকে নির্বাচন করা হয়েছিল, যাদের মধ্যে ১৯১ জন সুস্থ ছিল এবং ৩৬৬ জন নানা ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন, যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা স্থূলতা। গবেষণায় বিশেষ ধরনের এমআরআই স্ক্যানার ব্যবহার করে গবেষকরা এই তথ্য পেয়েছেন। যাদের কোনো শারীরিক সমস্যা ছিল না, তাদের হার্ট ছিল তাজা এবং কর্মক্ষম। কিন্তু যাদের নানা অসুস্থতা ছিল, তাদের হার্টের কার্যক্ষমতা কমে গিয়েছিল এবং 'ফাংশনাল এজ' বেশ কয়েক বছর বেড়ে গিয়েছিল।
গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, যাদের উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস ছিল, তাদের হৃৎস্পন্দন ছিল অনিয়মিত, যা একটি বিপজ্জনক অবস্থা। একে ব্র্যাডিঅ্যারিদ্মিয়া বলা হয়, যেখানে হার্টের হার ৬০ বিট প্রতি মিনিটের নিচে নেমে যায়। এই অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন হার্ট ব্লকের কারণ হতে পারে, যার ফলে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
প্রতিদিনের জীবনযাপনে যত বেশি অবহেলা, তত বেশি ঝুঁকি। আধুনিক জীবনযাত্রার কারণে ফাস্টফুডের প্রতি আগ্রহ, ব্যায়ামের অভাব, মানসিক চাপ, দীর্ঘ সময় স্ক্রীন সামনে বসে থাকা, এবং রাতজাগা—সবই হার্টের বয়স বাড়ানোর মূল কারণ।
ফাস্টফুড ও প্রক্রিয়াজাত খাবার অত্যধিক খাওয়া
বিস্মৃত জীবনযাপন ও অনিয়মিত খাদ্যাভাস
মানসিক চাপ ও অস্থিরতা
দীর্ঘ সময় বসে থাকা, বিশেষ করে মোবাইল বা কম্পিউটার স্ক্রীনের সামনে
ঘুমের অভাব ও অল্প ঘুম
তবে, চিন্তার কিছু নেই। কিছু সাধারণ অভ্যাস পরিবর্তনেই আপনি আপনার হার্টকে সুরক্ষিত রাখতে পারেন:
নিয়মিত ব্যায়াম করুন এবং সুস্থ খাদ্যাভ্যাস গ্রহণ করুন।
প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন।
মানসিক চাপ কমাতে ধ্যান বা মেডিটেশন করুন।
অতিরিক্ত ফাস্টফুড থেকে দূরে থাকুন এবং প্রাকৃতিক খাবার গ্রহণ করুন।
হার্ট চেকআপ করুন এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করান।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.