সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট হাফিজ আল-আসাদের কবর থেকে তাঁর দেহাবশেষ চুরি হয়ে গেছে বলে দাবি করেছে দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যম। সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকালে সিরীয় সংবাদমাধ্যমে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশিত হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের লাতাকিয়া প্রদেশের কারদাহা শহরে, যেখানে হাফিজ আল-আসাদকে তাঁর পারিবারিক সমাধিস্থলে দাফন করা হয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, কবরস্থানটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং হাফিজ আল-আসাদের কবরের স্থানে এখন একটি বড় গর্ত দেখা যাচ্ছে। কিন্তু তাঁর লাশের কোনো হদিস মিলছে না।
কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে সে সম্পর্কে এখনও কিছু জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর কেউ এই কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে। প্রসঙ্গত, হাফিজ আল-আসাদ সিরিয়ার বর্তমান স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের পিতা এবং ১৯৭১ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত সিরিয়ার শাসক ছিলেন।
সিরিয়ায় বর্তমানে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতা নতুন মাত্রা পেয়েছে। বিশেষ করে সুন্নি-নেতৃত্বাধীন বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এর মধ্যেই ঘটল এই কবর ভাঙচুর ও লাশ চুরির ঘটনা।
গত বছরের ডিসেম্বরেও বিদ্রোহী যোদ্ধারা হাফিজ আল-আসাদের কবর লক্ষ্য করে আগুন ধরিয়ে দেন। সে সময় সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন বিদ্রোহী পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে কবরটি পুড়িয়ে দিচ্ছে। সেই ঘটনায় কবরস্থানের আরও বেশ কিছু স্থাপনাও পুড়ে যায়।
হাফিজ আল-আসাদ ২০১২ সালে মৃত্যুবরণ করেন এবং তাঁকে কারদাহায় দাফন করা হয়। তাঁর ছেলে বাশার আল-আসাদ ২০০০ সাল থেকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তবে ২০১১ সালে আরব বসন্তের সময় সিরিয়াতেও গণবিক্ষোভ শুরু হলে সরকার দমন-পীড়নের পথে যায়। এতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে পড়ে এবং দেশজুড়ে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়।
২০১৫ সালে রাশিয়ার হস্তক্ষেপে বাশার আল-আসাদ ফের শক্তিশালী হন। রুশ বিমান হামলায় বিদ্রোহীরা একাধিক অঞ্চল থেকে পিছু হটে। তবে বর্তমানে হিজবুল্লাহর মতো মিত্র গোষ্ঠী দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে রাশিয়া নিজেই চাপের মধ্যে আছে। ফলে সিরিয়ার বিদ্রোহীরা আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
এই পরিস্থিতিতে বাশার আল-আসাদ প্রেসিডেন্ট হিসেবে চরম চাপে রয়েছেন। এমনকি সম্প্রতি হামলা শুরু হলে, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দাবি অনুযায়ী, তিনি নাটকীয়ভাবে রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.