আয়রন হলো শরীরের জন্য একটি অত্যাবশ্যক খনিজ, যা শরীরের নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজে অংশ নেয়। এর প্রধান কাজ হলো লোহিত রক্তকণিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে সারা শরীরে অক্সিজেন পরিবহন করা। শরীর প্রতিদিন যতটা আয়রন শোষণ করে, তা অনেকটা নির্ভর করে শরীরে পূর্বে সঞ্চিত আয়রনের পরিমাণের উপর।
আয়রনের ঘাটতির ফলে রক্তাল্পতা (অ্যানিমিয়া) দেখা দিতে পারে। এতে শরীর দুর্বল ও ক্লান্ত লাগে, চোখ-মুখ ফ্যাকাসে হয়ে যায়, ত্বকে রুক্ষতা দেখা দেয় এবং মুখে ব্রণও হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি ঘাটতি থাকলে শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে কিছু খাবার রয়েছে, যেগুলি নিয়মিত খেলে আয়রনের ঘাটতি অনেকটাই পূরণ করা সম্ভব।
বেদানা: এটি একটি দারুণ আয়রনসমৃদ্ধ ফল। প্রতি ১০০ গ্রাম বেদানায় প্রায় ০.৩১ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। বেদানায় ভিটামিন সি-ও রয়েছে, যা আয়রনের শোষণ প্রক্রিয়ায় সহায়ক ভূমিকা রাখে।
ডাল: ডাল আয়রনের অন্যতম ভালো উৎস। মুগ, মসুর, বিউলি, কড়াই কিংবা রাজমা—প্রায় সব ধরনের ডালেই আয়রন রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম ডালে প্রায় ৭.৪ মিলিগ্রাম আয়রন পাওয়া যায়। পাশাপাশি ডালে ফাইবার ও প্রোটিনও থাকে, যা শরীরের জন্য অতন্ত উপকারী।
কাজুবাদাম: প্রতি ১০০ গ্রাম কাজুবাদামে প্রায় ৬.৭ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। এটি একটি পুষ্টিকর স্ন্যাকস হিসেবে খাওয়া যেতে পারে। দুপুর বা বিকেলের নাশতায় এক মুঠ কাজুবাদাম শরীরের আয়রনের চাহিদা পূরণে সহায়ক হতে পারে।
পালংশাক: সবুজ শাকসবজির মধ্যে পালংশাক আয়রনের ভালো উৎস। এক কাপ সেদ্ধ পালংশাকে প্রায় ৩.৬ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। এছাড়াও এতে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে, যা শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
শুধু শারীরিক ক্লান্তিই নয়, আয়রনের ঘাটতির রয়েছে আরও অনেক উপসর্গ। সকালে ঘুম থেকে উঠেই ক্লান্ত লাগা, মুখ-চোখে ফ্যাকাশে ভাব, সামান্য পরিশ্রমেই হাঁপ ধরে যাওয়া, মাথাব্যথা ও ত্বকে রুক্ষতা এসবই হতে পারে আয়রনের অভাবের লক্ষণ। বেশি ঘাটতি হলে ঠোঁট ও জিভ ফুলে যেতে পারে। এই উপসর্গগুলো নিয়মিত দেখা দিলে সাধারণ ক্লান্তি ভেবে উপেক্ষা না করে দ্রুত হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা করানো উচিত এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.