ইসরাইলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোশে দায়ান তার আত্মজীবনী The Story of My Life-এ এক চমকপ্রদ সত্য লিখেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, "আরবরা, যারা ছোট-বড় সবধরনের ইস্যুতে নিজেদের মধ্যে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে, কখনোই ইসরাইলের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে না।" এই কথাগুলো নিছক কূটনৈতিক পর্যবেক্ষণ ছিল না, বরং ভবিষ্যতের বাস্তবতার একটি রূঢ় পূর্বাভাস ছিল।
১৯৮৩ সালের শেষের দিকে এই বিভেদ ফিলিস্তিনিদের মধ্যে প্রবেশ করে। "আল-ফাতহ" নামক প্রধান ফিলিস্তিনি সংগঠনের মধ্যেও শুরু হয়ে যায় বিশাল এক বিভাজন। লেবাননের ময়দানে ব্যর্থতার পর ফিলিস্তিনিদের একটি বড় অংশ ইয়াসির আরাফাতের নেতৃত্বের ওপর থেকে আস্থা সরিয়ে নেয় এবং তারা "আবু মূসা"-র নেতৃত্বে এক নতুন ধারা গড়ে তোলে, যার উদ্দেশ্য ছিল ইয়াসির আরাফাতকে নেতৃত্বচ্যুত করা। কিন্তু আরাফাতও নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে রাজি ছিলেন না। এই দ্বন্দ্ব রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পরিণত হয়।
এ পরিস্থিতিতে ইসরাইলের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইৎজাক শামিরের একটি মন্তব্য প্রকাশিত হয় ওয়াশিংটন পোস্ট-এ, যেখানে তিনি বলেন, "পিএলও-র ভেতরে এই অভ্যন্তরীণ কোন্দল, বিভাজন ও ভাঙন আমাদের জন্য মঙ্গলজনক।" ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা আরো স্পষ্টভাবে বলেন, "তারা এখন নিজেদের মধ্যেই ব্যস্ত, আর সেটাই আমাদের জন্য ভালো।"
এটি কেবল শত্রুর উক্তি নয়, বরং আমাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। যে জাতি নিজের মধ্যে বিভাজিত হয়, সে তার শত্রুদের বিরুদ্ধে সফলভাবে লড়াই করতে পারে না। বরং, সেই জাতি এক সময় নিজেই তার শত্রু হয়ে ওঠে এবং তার আত্মবিনাশী হয়ে ওঠে। এটি যেমন ইসরাইলের কৌশল ছিল, তেমনই আমাদের নিজেদের দ্বন্দ্বে তা বাস্তব হয়ে ওঠে।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.