সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থান আরও কঠোর করেছেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরিচালনার পদ্ধতিতে পরিবর্তন না আনে, তবে তাদের করমুক্ত সুবিধা বাতিল করা হবে। বিষয়টি সামনে আসে এমন এক সময়ে, যখন হার্ভার্ডের জন্য নির্ধারিত ২.২ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল অর্থায়ন স্থগিত করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে ইতিমধ্যে গবেষণার ওপর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যক্ষ্মা নিয়ে গবেষণা করা একজন গবেষককে তার কাজ বন্ধ করতে বলা হয়েছে।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিট এক বিবৃতিতে বলেন, “প্রেসিডেন্ট চান হার্ভার্ড ক্ষমা চায়। হার্ভার্ডকে ক্ষমা চাইতেই হবে।” ট্রাম্পের অভিযোগ, হার্ভার্ডসহ বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েল-বিরোধী বিক্ষোভ এবং হামাসের প্রতি সহানুভূতির নামে ইহুদি বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। তিনি মনে করেন, এসব বিশ্ববিদ্যালয় এখন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের মতো আচরণ করছে। তাই তাদের করমুক্ত মর্যাদা বাতিল করে কর প্রদান করতে বাধ্য করা উচিত।

এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “যদি হার্ভার্ড সরকারের নির্দেশ না মেনে চলে, তবে তাদের করছাড় বাতিল করে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের মতো কর আরোপ করা উচিত।”

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার এই বিষয়ে বলেছেন, “আমরা আমাদের স্বাধীনতা বা সংবিধানসিদ্ধ অধিকার নিয়ে কোনো আপস করব না।” বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরকারের এমন পদক্ষেপকে শিক্ষার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছে।

এই বিষয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও হার্ভার্ডের অবস্থানকে সমর্থন জানিয়েছেন। এক্স-এ তিনি লেখেন, “শিক্ষার স্বাধীনতাকে দমন করার এটি একটি জবরদস্তি প্রচেষ্টা। হার্ভার্ড সাহসিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।”

তবে শুধু হার্ভার্ডই নয়, ট্রাম্প প্রশাসনের আর্থিক চাপ ও নজরদারির মুখে পড়েছে আরও অনেক মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়, যেমন—কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতিগত বৈচিত্র্য, শিক্ষকদের মতাদর্শ এবং মধ্যপ্রাচ্য সম্পর্কিত পাঠক্রম ও গবেষণা কার্যক্রমের উপর নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা বনাম রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে এক নতুন সাংবিধানিক দ্বন্দ্বের সূচনা করতে পারে। বিশেষ করে নির্বাচনের বছরে এই ধরনের বিতর্ক আরও তীব্র হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।