তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ঘিরে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার উচ্চপর্যায়ের আলোচনার পরবর্তী ধাপ নিয়ে শুরু হয়েছে বিভ্রান্তি। সোমবার পর্যন্ত ধারণা ছিল, নতুন দফার আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে ইতালির রাজধানী রোমে। তবে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ভোরে ইরান আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছে, এই আলোচনার স্থান পরিবর্তন করে আবারও ওমান নির্ধারণ করা হয়েছে।
যদিও মার্কিন কর্মকর্তারা এখনো পর্যন্ত আলোচনার ভেন্যু নিশ্চিত করেননি, তবুও সোমবার হোয়াইট হাউসে এল সালভাদরের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এক বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পারমাণবিক আলোচনা প্রসঙ্গে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “আমার মনে হচ্ছে ওরা আমাদের সময় নষ্ট করাচ্ছে।”
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানায়, দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকাই বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেছেন যে, আলোচনা ওমানেই অনুষ্ঠিত হবে। তবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি। উল্লেখ্য, এই সপ্তাহে রোমে ইস্টার সানডে উদযাপন হবে, যা শহরটির জন্য এক বিশাল ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক আয়োজন।
প্রসঙ্গত, প্রথম দফার আলোচনা ইতোমধ্যেই গত সপ্তাহে ওমানে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রায় ৫০ বছরের বৈরী সম্পর্কের ইতিহাসকে পেছনে ফেলে এই আলোচনা দুই দেশের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এর আগেও একাধিকবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান না এলে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে বিমান হামলা চালানো হতে পারে। অন্যদিকে, ইরান সতর্ক করে আসছে, যদি চাপ প্রয়োগ অব্যাহত থাকে তবে তারা অস্ত্রমানব উপযোগী ইউরেনিয়াম মজুদের পথে এগোতে বাধ্য হবে।
এর আগে একটি সূত্র জানিয়েছিল, আগামী শনিবার রোমে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি জাপানের ওসাকা সফরের সময় বলেন, ওমানের অনুরোধে ইতালি আলোচনার জন্য ভেন্যু দিতে রাজি হয়েছে। তিনি বলেন, “যেকোনো ইতিবাচক ফল বয়ে আনতে পারে এমন বৈঠক আমরা সবসময় স্বাগত জানাই, বিশেষ করে পারমাণবিক ইস্যুতে।”
এদিকে ডাচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসপার ভেল্ডক্যাম্পও লুক্সেমবার্গে এক সভায় বলেন, তাঁর জানা মতে আসন্ন আলোচনা রোমেই হওয়ার কথা। তবে ইরান বা যুক্তরাষ্ট্র—দুই দেশই এখনো ভেন্যু পরিবর্তনের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি।
অন্যদিকে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি সোমবার ইরাকি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এক আলোচনায় রোমকেই আলোচনার স্থান হিসেবে উল্লেখ করেন। ইরাকি রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার খবরে এই তথ্য উঠে এসেছে।
ট্রাম্প তাঁর বক্তব্যে বলেন, “আমি চাই ইরান একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশ হয়ে উঠুক। তবে তারা যেভাবে র্যাডিকালভাবে পরিচালিত হচ্ছে, তাতে তাদের কোনোভাবেই পারমাণবিক অস্ত্র হাতে তুলতে দেওয়া যায় না।”
এদিকে, জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রধান জানিয়েছেন, তিনি চলতি সপ্তাহে ইরান সফর করবেন। এ সফরে তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের প্রবেশাধিকার নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.