একটি প্রচলিত প্রবাদ আছে—“খালি পেটে জল আর ভরা পেটে ফল খেতে মানা।” অনেকেই এই প্রবাদকে অক্ষরে অক্ষরে মানেন, আবার কেউ কেউ ইন্টারনেট যুগে এসে এর যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাহলে আসলেই কি খালি পেটে ফল খাওয়া উচিত? এ বিষয়ে চিকিৎসক এবং পুষ্টিবিদের মতামত জানলে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয়।
মুম্বাইয়ের কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ান ফিওনা সামপাত সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানান—সব সময় খালি পেটে ফল খাওয়াকে ভালো বলা যায় না। অনেকের ধারণা, খালি পেটে ফল খেলে এর পুষ্টিগুণ বেশি কাজে লাগে। কিন্তু এই দাবির পক্ষে তেমন কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। বরং খালি পেটে ফল খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এই ওঠানামা সমস্যাজনক হয়ে দাঁড়ায়।
ফলের প্রাকৃতিক চিনি (ফ্রুক্টোজ) পেটে অন্য কোনো খাবার না থাকলে খুব দ্রুত রক্তে গ্লুকোজ বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে তা দ্রুত কমেও যেতে পারে, যা ক্লান্তি, অতিরিক্ত ক্ষুধা এবং গ্লুকোজ মাত্রার অনিয়মিততার কারণ হতে পারে। এছাড়া কমলা, মোসাম্বির মতো সাইট্রাস ফলে থাকা অ্যাসিড খালি পেটে খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
তবে এর মানে এই নয় যে সকালের খাবার তালিকা থেকে ফল একেবারে বাদ দিতে হবে। বরং ফল খাওয়ার ধরনে সামান্য পরিবর্তন আনলেই উপকারিতা পাওয়া সম্ভব। ফলের সঙ্গে প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বি যুক্ত করে খেলে রক্তে শর্করার ওঠানামা কম হয় এবং শরীর স্থায়ী শক্তি পায়। যেমন—দই, ছানা, বাদাম, বীজ বা দুধের সঙ্গে ফল খেলে শরীর আরও সুষম পুষ্টি পায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, সকালবেলা খালি পেটে না খেয়ে বরং সকালের নাস্তা ও দুপুরের খাবারের মাঝামাঝি সময়ে ফল খেলে পরিপূর্ণতার অনুভূতি বাড়ে এবং সারাদিনে কম ক্যালোরি গ্রহণ হয়, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.