বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক সম্প্রতি একটি গবেষণায় পোলট্রি বাজারে বিক্রি হওয়া মুরগির মাংসে টাইফয়েড (স্যালমোনেলা) ও ডায়রিয়ার (ইকোলাই) জীবাণুর উপস্থিতি আবিষ্কার করেছেন। এই গবেষণা থেকে জানা গেছে, স্থানীয় বাজারে বিক্রি হওয়া মুরগির মাংসে ক্ষতিকর জীবাণু মিশে থাকতে পারে, যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য বিপদজনক।
গবেষণার মধ্যে ময়মনসিংহ সদর ও আশপাশের বিভিন্ন পোলট্রি বাজারের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, বায়োসিকিউরিটি ব্যবস্থা এবং পোলট্রি জবাইকরণ বিষয়ে বিক্রেতাদের মনোভাব যাচাই করা হয়েছে। এই গবেষণাটি অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস হোসেনের নেতৃত্বে পরিচালিত হয় এবং এতে অংশ নেয় ময়মনসিংহ জেলার ১২টি বাজারের ২৪টি পোলট্রি দোকান।
গবেষণায় দেখা যায়, স্থানীয় বাজারের মাংসে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ইকোলাই ও সালমোনেলা জীবাণু পাওয়া গেছে, যা সাধারণত মাংসে উপস্থিত থাকার কথা নয়। এই জীবাণু মাংসে উপস্থিতি, অনিয়মিত জবাইকরণ পদ্ধতি এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে হতে পারে।
গবেষকরা আরও জানিয়ে দিয়েছেন যে, ৮৪.৬২ শতাংশ দোকানে মুরগির জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নেই, ৯২ শতাংশ দোকানে ময়লা পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নেই এবং ৪৬.১৫ শতাংশ দোকানে পর্যাপ্ত আলো ছিল না। এছাড়াও ৩০.৭৭ শতাংশ দোকানে মাংস কাটার জায়গা অস্বাস্থ্যকর ছিল এবং বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা ছিল না। এসব সমস্যা জীবাণু বৃদ্ধির জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করে।
গবেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের স্থানীয় বাজারগুলোতে পোলট্রি দোকানগুলোর স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে ক্ষুদ্র প্রসেসিং ইউনিট স্থাপন করা প্রয়োজন। এটি নিশ্চিত করবে যে ক্রেতারা নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত মাংস কিনতে পারবেন। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রসেসিং ইউনিট থেকে প্রাপ্ত মাংসে কোনো স্যালমোনেলা বা ইকোলাই জীবাণু শনাক্ত করা যায়নি, যা ইঙ্গিত দেয় যে সেখানে প্রক্রিয়াজাত মাংস নিরাপদ।
গবেষকরা পরামর্শ দিয়েছেন যে, স্থানীয় বাজারগুলোতে ক্ষুদ্র প্রসেসিং ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা গেলে, এটি যেমন নিরাপদ মাংস সরবরাহ নিশ্চিত করবে, তেমনি স্থানীয় পোলট্রি দোকানগুলোর ব্যবসাও লাভবান হবে।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.