গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় ভেঙে পড়া একটি ভবনের ইট-পাথরের নিচ থেকে এক নবজাতকের কান্না ভেসে আসে। সেই কান্না শুনে এক ব্যক্তি দৌড়ে গিয়ে জীবিত শিশুটির ছোট্ট দেহটি উদ্ধার করে। শিশুটির শরীরে ছিল একটি কম্বল মোড়ানো, এবং তাকে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্যকর্মীরা শিশুটিকে পরীক্ষা করার সময়, সে থেমে থেমে নড়ে উঠছিল, যা দেখে উপস্থিত সবাই বিস্মিত হয়ে ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি উচ্চারণ করেন।
শিশুটির নাম ইল্লা ওসামা আবু দাগ্গা। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে শিশুটি একটি জাজিমের ওপর ঘুমিয়ে ছিল, সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় তার দেহ। এই নবজাতক কন্যাশিশুটি ২৫ দিন আগে গাজায় একটি যুদ্ধবিরতির মাঝে জন্ম নিয়েছিল। তবে কে শিশুটিকে তাৎক্ষণিকভাবে আশ্রয় দিয়েছেন, তা জানা যায়নি।
গাজা উপত্যকার খান ইউনিস শহরের কাছে সীমান্তের এলাকায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় ধ্বংস হওয়া ভবনের ভেতর থেকে উদ্ধারকারীরা শিশুটির ছোট্ট দেহটি বের করেন।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সেহরির সময় ইসরাইলি বিমান হামলায় শিশুটির বাবা-মা এবং ভাই নিহত হন। এই হামলায় শিশুটির দাদা ছাড়া পুরো পরিবারই নিহত হয়। তাদের সঙ্গে আরেকটি পরিবারের সাত বছরের শিশু ও তার বাবা নিহত হয়েছেন।
হাজেন আত্তার, একজন বেসামরিক প্রতিরক্ষাকর্মী জানান, স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে জানতে পারেন যে, শিশুটির বয়স ২৫ দিন। বিমান হামলার পর থেকে শিশুটি ইট-পাথরের ভেতরে আটকা পড়ে ছিল। শুরুতে শিশুটি কাঁদছিল, কিন্তু ধীরে ধীরে তার কান্না থেমে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করা হয় এবং আল্লাহর রহমতে সে নিরাপদে আছে।
গাজার জনগণ যুদ্ধের অবসান আশা করলেও, ১৫ মাসের দীর্ঘ সংঘর্ষে পুরো উপত্যকা ধ্বংস হয়ে গেছে। এই সময়ের মধ্যে ৪৯ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।
মঙ্গলবার আকস্মিকভাবে ইসরাইলি বাহিনী গাজায় বিমান হামলা শুরু করে, যা যুদ্ধবিরতি চুক্তির অবমাননা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তিনদিনে ৭০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
খান ইউনিসের বাইরে আল-কাবিরা গ্রামে ইসরাইলি হামলায় ১৬ জন নিহত হন।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে যে, তারা শুধুমাত্র হামাস যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। তাদের দাবি, হামাস আবাসিক এলাকার ভেতর থেকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে, যার ফলে বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতি হচ্ছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, হামাস দক্ষিণ ইসরাইলে আকস্মিক হামলা চালিয়ে ১,২০০ ইসরাইলিকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে। এরপর থেকে ইসরাইলি বাহিনী হামাসকে ধ্বংস করতে অবিরত হামলা চালিয়ে আসছে।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.