জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেছেন, বাংলাদেশের সামনে একটি বিরল সুযোগ রয়েছে, যদি সবার প্রত্যয় জোরালো থাকে, তবে জটিল পরিস্থিতিতেও সারা বিশ্বকে বিরাট আশাবাদের গল্প শোনানো সম্ভব। তিনি এই সুযোগ গ্রহণে সবার সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন।
তিনি গত বুধবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক আলোচনায় এসব কথা বলেন, যেখানে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসের ছাত্র আন্দোলন ও তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে আলোচনা হয়।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের ঘটনায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, তখনকার আওয়ামী লীগ সরকার ও তাদের সদস্যরা আন্দোলন দমন করতে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। এই সময়ে প্রায় ১ হাজার ৪০০ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই গুলিতে নিহত হয়েছেন।
ভলকার তুর্ক আলোচনায় বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী প্রতিশোধমূলক সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটেছে এবং এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে সুবিচার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, আইসিটি (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল) ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ আদালতে এসব বিষয়ে মামলা চলছে, তবে সুবিচার নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।
তুর্ক বলেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণ চ্যালেঞ্জের মুখে থাকলেও, সবার উদ্যোগ ও দৃঢ়তার মাধ্যমে এটি সম্ভব। বাংলাদেশের জন্য এটি বিশ্বের কাছে আশাবাদী গল্প শোনানোর সুযোগ বলে তিনি মনে করেন।
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থায় মানবাধিকার সংযুক্ত করতে একটি বড় সুযোগ এসেছে, যা সমস্ত বাংলাদেশের জনগণের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, ধর্মীয় বা জাতিগত মতানৈক্য থাকলেও, বাংলাদেশে সকল নাগরিকের একই পরিচয় হচ্ছে বাংলাদেশি। তাই সংস্কার কার্যক্রমে সহযোগিতা করা উচিত।
অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, বাংলাদেশে গণহত্যার নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য তদন্ত এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আইসিটি আইন সংশোধন করে স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা হয়েছে।
এছাড়া, ফারহানা শারমিন ইমু এবং মীর মাহমুদুর রহমানসহ অন্যান্য বক্তারা স্বাধীন বিচার এবং উপরাষ্ট্রীয় অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান।