খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীরা ভিসি ও প্রো-ভিসির অপসারণসহ ৬ দফা দাবি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে ঢাকায় যাত্রা করেছেন।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টায় দুটি বাসে করে ৮০ জন শিক্ষার্থী ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। এ সময় তাদের মাথা ও চোখে লাল কাপড় বাঁধা ছিল। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে বেলা ১১টায় তাদের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে।
যাত্রার আগে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, "আমরা ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই আমাদের দাবি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করব। এরপর নিরাপদ স্থানে চলে যাব। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা ফিরব না। তবে অনলাইনে আমাদের কার্যক্রম চলবে।"
এক প্রশ্নের উত্তরে তারা জানান, "ভিসিসহ কিছু শিক্ষক বলার চেষ্টা করছেন যে আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। হামলাকারীরা স্পষ্ট ও চিহ্নিত হওয়া সত্ত্বেও তাদের বাদ দিয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি বানানো হয়েছে। রক্তাক্ত কুয়েট প্রদর্শনীতে অস্ত্রধারীদের নাম, পরিচয় ও ছবি বিস্তারিতভাবে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কুয়েটে ছাত্রদল সমর্থক ও বিএনপির লোকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। আমাদের মনে হচ্ছে, কুয়েট প্রশাসনেরই সমস্যা রয়েছে।"
এর আগে শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। চিঠিতে তারা উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের ১১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদল ক্যাম্পাসে রাজনীতি শুরু করতে চাইলে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ মিছিলের ডাক দেয়। মিছিলে ছাত্রদলের কর্মীরা হঠাৎ এসে শিক্ষার্থীদের ধাক্কা দিয়ে হুমকি দেয়। এতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয় এবং স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ছাত্রদল শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, "এই হামলায় কুয়েটের শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। ৪ ঘণ্টা ধরে চলা এই হামলার সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের কোনো নিরাপত্তা দিতে পারেনি। এ কারণে আমরা ভিসি ও প্রো-ভিসির পদত্যাগসহ ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেছি।"
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আলটিমেটাম দেওয়ার পরও তাদের দাবি পূরণ না হওয়ায় ভিসির অপসারণ দাবি করা হচ্ছে। তাদের মতে, ভিসি রাজনীতিমুক্ত কুয়েট ক্যাম্পাসে অনুপ্রবেশের অপচেষ্টায় জড়িত ছিলেন। ছাত্রদলের সন্ত্রাসী হামলা থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। দেড়শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার পরও দায় নিতে অস্বীকার করেছেন। এ ছাড়া চিহ্নিত হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ভিসির কাছে ৬ দফা দাবি পূরণের পর্যাপ্ত সময় দেওয়া সত্ত্বেও তিনি দাবিগুলো পুরোপুরি মেনে নেননি।
শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তারা ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.