প্রায় ৯০ বছর ধরে চলে আসা রীতি বাতিল করল আসাম বিধানসভা। শুক্রবারের জুমার নামাজের জন্য প্রচলিত দুই ঘণ্টার বিরতি আর থাকছে না। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার নেওয়া এই বিতর্কিত সিদ্ধান্ত কার্যকর হলো গতকাল (শুক্রবার) থেকে।
গত আগস্টে বিধানসভায় পাশ হওয়া একটি প্রস্তাবের ভিত্তিতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ফলে শুক্রবার মুসলিম বিধায়কদের আর নামাজের জন্য নির্ধারিত বিরতি দেওয়া হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা আগে থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, "আমরা কাজে অগ্রাধিকার দিতে চাই। তাই আসাম বিধানসভায় জুমার বিরতির প্রথা তুলে দেওয়া হচ্ছে। এটি ঔপনিবেশিকতার আরেকটি চিহ্ন, যা আমরা মুছে ফেলছি।"
১৯৩৭ সালে আসামে মুসলিম লীগের সৈয়দ সাদউল্লা এই নিয়ম চালু করেছিলেন। তবে হিমন্ত বিশ্বশর্মার নেতৃত্বে গঠিত সাত সদস্যের কমিটি বিষয়টি খতিয়ে দেখে এবং সিদ্ধান্ত নেয় যে, লোকসভা বা রাজ্যসভায় এমন কোনো বিরতি নেই, তাই আসামেও এটি অপ্রয়োজনীয়। শুক্রবার বিধানসভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই নিয়ম বাতিল করা হয়।
বিধানসভার স্পিকার বিশ্বজিৎ দইমারি ও শাসক দলের বিধায়কদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তবে স্বাভাবিকভাবেই এ সিদ্ধান্ত ঘিরে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
এআইইউডিএফ বিধায়ক রফিকুল ইসলাম এ সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, "সংখ্যাগরিষ্ঠের জোরে সংখ্যালঘুদের ওপর এ নিয়ম চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিধানসভায় প্রায় ৩০ জন মুসলিম বিধায়ক রয়েছেন, আমরা এর বিরুদ্ধে মতামত দিয়েছি। কিন্তু বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা ব্যবহার করে এটি বাতিল করল।"
কংগ্রেসের পরিষদীয় নেতা দেবব্রত সাইকিয়া জানিয়েছেন, "বিধানসভার কাছাকাছি কোনো জায়গায় মুসলিম বিধায়কদের নামাজের ব্যবস্থা করা যেত। কারণ, শুক্রবারের নামাজ মুসলিমদের জন্য একটি বিশেষ ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা। এর ফলে অনেক বিধায়ক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অংশ নিতে পারছেন না।"
এই সিদ্ধান্তের ফলে আসাম বিধানসভার দীর্ঘদিনের একটি প্রচলিত নিয়মের অবসান ঘটল। তবে বিতর্ক ও অসন্তোষ এখনো রয়ে গেছে।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.