থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্যাতংতার্ন সিনাওয়াত্রা চীনের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চান, বিশেষ করে সাইবার স্ক্যাম সেন্টার সংক্রান্ত সমস্যার মোকাবিলায়। এটি এমন একটি ইস্যু যা উভয় দেশকেই সমস্যায় ফেলছে।
গত বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) চীন-থাইল্যান্ড কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে বেইজিং সফরে যান থাই প্রধানমন্ত্রী। সফরের শেষ দিনে (শনিবার) তিনি চীনের সঙ্গে ১৪টি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন, যা দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, চার দিনের এই সফর প্রমাণ করেছে যে থাইল্যান্ড ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় ও ইতিবাচক রয়েছে।
সফরের আগে প্যাতংতার্ন জানান, তিনি আশা করছেন থাই-মিয়ানমার-চীন সীমান্তে সাইবার প্রতারণা চক্রগুলো চিহ্নিত ও দমন করার বিষয়ে থাইল্যান্ডের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরতে পারবেন।
বুধবার বেইজিংয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং থাইল্যান্ডের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং বলেন,
"উভয় দেশের উচিত আইন প্রয়োগ, নিরাপত্তা ও বিচার বিভাগীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করা, যাতে জনগণের জীবন ও সম্পদ সুরক্ষিত থাকে।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী চীনা পর্যটকদের আস্থা ফেরাতে বেইজিংয়ের সহযোগিতা চান।
সম্প্রতি চীনের টিভি তারকা ওয়াং জিংকে থাইল্যান্ড থেকে অপহরণ করে মিয়ানমারের একটি প্রতারণা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনায় চীনা পর্যটকদের মধ্যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, যা থাইল্যান্ডের পর্যটন শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
প্যাতংতার্ন বলেন, তিনি থাইল্যান্ডে অবস্থানরত চীনা নাগরিকদের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন।
সাইবার প্রতারণা বন্ধে যৌথ পদক্ষেপের পাশাপাশি থাইল্যান্ড ও চীন নিম্নলিখিত খাতে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে—
✅ অবকাঠামো উন্নয়ন
✅ ডিজিটাল অর্থনীতি
✅ ইলেকট্রনিক পরিবহন
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন,
"উভয় দেশ চীন-লাওস-থাইল্যান্ডের সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনায় এগিয়ে যাবে, যা সার্বিকভাবে ফলপ্রসূ হবে।"
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্যাতংতার্ন সিনাওয়াত্রা এবং চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং-এর বৈঠকে চীন-থাইল্যান্ড পারস্পরিক সহযোগিতার ১৪টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য চুক্তিগুলো হলো—
🔹 কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) উন্নয়ন
🔹 সবুজ (পরিবেশবান্ধব) উন্নয়ন
🔹 মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধি
উপসংহার
থাইল্যান্ড ও চীনের সম্পর্ক আরও জোরদার করতে এই সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিশেষ করে সাইবার অপরাধ দমন, পর্যটন খাত পুনরুদ্ধার এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি—এই তিনটি প্রধান ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে অগ্রগতি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সহযোগিতা ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত হবে।