বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংযুক্ত আরব আমিরাত, দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে সংঘটিত আন্দোলনের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের পুনর্বাসন ও পাসপোর্ট থেকে নো-এন্ট্রি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ৬ দফা দাবি জানিয়েছেন প্রবাসীরা।
তাদের দাবি আদায় না হলে, তারা রেমিট্যান্স শাটডাউন (প্রবাসী আয় পাঠানো বন্ধ) কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসীরা এই হুঁশিয়ারি দেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরব আমিরাত ফেরত প্রবাসী খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন,
"আমরা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বসে আমাদের দাবি তুলে ধরতে চাই। দ্রুত তার সাক্ষাৎ চাই। যদি আমাদের ন্যায্য দাবি পূরণ না করা হয়, তবে রেমিট্যান্স শাটডাউনসহ কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।"
তিনি আরও বলেন,
"আমরা তো দেশের মানুষের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বিদেশে আন্দোলন করেছি। কিন্তু দেশে ফিরে মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমাদের অনেকেই ৬ মাস, ২ বছর, এমনকি ২০ বছর প্রবাসে কাটিয়ে এসেছি।"
প্রবাসীদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি হলো জুলাই বিপ্লবে প্রবাসীদের ত্যাগের স্বীকৃতি দেওয়া।
খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন,
"আমরা চাই, জুলাই বিপ্লবের ইতিহাসে আমাদের অবদান লিপিবদ্ধ হোক। যেসব প্রবাসী সেখানে আন্দোলন করেছেন, তাদের নাম ইতিহাসে লেখা হোক।"
সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসীরা অভিযোগ করেন যে, জুলাই বিপ্লবের সময় স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সমর্থন জানানোয় অনেক প্রবাসীকে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে।
তারা দাবি করেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কিছু নেতৃবৃন্দ এই আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে, প্রবাসীদের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহ করে সে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে হস্তান্তর করেন। তৎকালীন কনস্যুলার বিএম জামাল এই ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন বলে প্রবাসীরা অভিযোগ করেন এবং তার বিচার দাবি করেন।
১. আরব আমিরাতসহ ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
2. সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি ফেরত প্রবাসীদের ‘নো-এন্ট্রি’ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা।
3. একই মামলায় এখনো যেসব প্রবাসী গ্রেফতার হচ্ছেন, তাদের গ্রেফতার প্রক্রিয়া কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত বন্ধ করা।
4. তৎকালীন কূটনীতিক ও কনসাল জেনারেল বিএম জামালসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা।
5. ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের সহায়তার জন্য ‘জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ গঠন করা এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তরে’ তাদের অন্তর্ভুক্ত করা।
6. প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানাতে ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলকে সাক্ষাৎকারের অনুমতি দেওয়া।
প্রবাসীরা সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের দাবি, যদি যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া না হয়, তবে রেমিট্যান্স শাটডাউন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে, যা দেশের অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.