ইরান গোপনে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে, যা উত্তর কোরিয়ার নকশার ভিত্তিতে নির্মিত এবং ইউরোপ পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম—এমনটাই দাবি করেছে দেশটির বিরোধী গোষ্ঠী ন্যাশনাল কাউন্সিল অব রেজিস্ট্যান্স অব ইরান (এনসিআরআই)।
সংগঠনটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এই অস্ত্র তৈরির কাজ দুটি পৃথক স্থাপনায় চলছে, যেগুলো মূলত স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ কেন্দ্রের ছদ্মবেশে পরিচালিত হচ্ছে। এনসিআরআই-এর মতে, এই কেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে তেহরান তার পারমাণবিক কর্মসূচির গতি বাড়াচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের তৈরি ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ৩,০০০ কিলোমিটারের বেশি (প্রায় ১,৮০০ মাইল) দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম, যা ইউরোপের বিভিন্ন অংশকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে পারে।
এনসিআরআই-এর তথ্য অনুযায়ী, ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (IRGC) এবং উন্নত প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা শাহরুদ মিসাইল সুবিধা পরিচালনা করছে। সেখানে পারমাণবিক ওয়ারহেড তৈরি করা হচ্ছে, যা ‘গাহেম-১০০’ ক্ষেপণাস্ত্রে সংযোজন করা হবে। এই ক্ষেপণাস্ত্র গ্রিস পর্যন্ত পৌঁছানোর সক্ষমতা রাখে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইরান ইতোমধ্যেই শাহরুদ কেন্দ্রে অন্তত তিনবার রকেট পরীক্ষা চালিয়েছে, যদিও সরকারিভাবে সেগুলোকে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ বলে দাবি করা হয়েছে। এনসিআরআই-এর দাবি, আইআরজিসি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আরও উন্নত ‘গাহেম-১০০’ রকেটের পরীক্ষা চালাতে চায়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দ্বিতীয় পরীক্ষামূলক কেন্দ্রটি সেমনান শহরের দক্ষিণ-পূর্বে ৪৩ মাইল দূরে অবস্থিত। সেখানে ‘সিমোরগ’ ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নয়ন কাজ চলছে, যা উত্তর কোরিয়ার নকশার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।
এনসিআরআই-এর দাবি অনুযায়ী, এই কেন্দ্রের কিছু অংশ ভূগর্ভস্থ, এবং এটি ২০০৫ সাল থেকে সম্প্রসারিত হচ্ছে। ইরান তার কর্মসূচিকে গোপন রাখতে মহাকাশ কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত করেছে এবং খোমেনি স্পেস লঞ্চ টার্মিনাল প্রতিষ্ঠা করেছে।
এনসিআরআই-এর যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি সোনা সামসামি বলেন, ‘তেহরান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করতে এবং তার পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য সময় কিনতে চাইছে।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, গত বছর ইসরায়েলের হামলার ফলে ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে, যা পশ্চিমা বিশ্বের জন্য তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করার একটি সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
সামসামি বলেন, ‘তেহরান বর্তমানে সবচেয়ে দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। দেশটির শাসকগোষ্ঠী এখন তাদের পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়নে গতি বাড়িয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখনই সময় এসেছে ইরানের সরকারকে অভ্যন্তরীণ দমন-পীড়ন, আঞ্চলিক যুদ্ধ এবং পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য আন্তর্জাতিকভাবে জবাবদিহির মুখোমুখি করার।’
সূত্র: এনডিটিভি
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.