জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ দ্বিতীয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমন্ত্রণে ১১ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে সাক্ষাৎ করবেন। এই আমন্ত্রণের ঘোষণা এমন এক সময়ে এসেছে যখন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারি সফরে ওয়াশিংটনের উদ্দেশে যাত্রা করেছেন। নেতানিয়াহু মঙ্গলবার ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
জর্ডানের রয়্যাল কোর্ট রোববার নিশ্চিত করেছে যে বাদশাহ আবদুল্লাহ ট্রাম্পের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন এবং চলতি মাসের শেষের দিকে হোয়াইট হাউসে বৈঠকে অংশ নেবেন। এটি হবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় ফেরার পর দুই নেতার মধ্যে প্রথম সরাসরি বৈঠক।
ট্রাম্পের ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে তিনি গাজা খালি করে সেখানকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনার কথা বলে আসছেন। তিনি প্রস্তাব দিয়েছেন যে গাজার অধিবাসীদের মিশর ও জর্ডানে পুনর্বাসন করা হোক। তবে এই প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে জর্ডান ও মিশর, পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশও।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প বলেন, “আমি জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহর সঙ্গে কথা বলেছি এবং তাকে বলেছি, আমি চাই আপনি আরও বেশি লোক নিন, কারণ গাজার পরিস্থিতি ভয়াবহ। আমি চাই, তিনি (বাদশাহ) কিছু মানুষকে গ্রহণ করুন।”
ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হলে এটি সাময়িক নাকি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, তিনি বলেন, “দুই রকমই হতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “আপনি প্রায় দেড় মিলিয়ন মানুষের কথা বলছেন, এবং আমরা পুরো এলাকাটি খালি করে ফেলি। ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে ওই অঞ্চলে অনেক দ্বন্দ্ব হয়েছে। আমি জানি না, তবে কিছু একটা হওয়া দরকার।”
বুধবার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের সময় বাদশাহ আবদুল্লাহ পুনর্ব্যক্ত করেন, “ফিলিস্তিনিদের নিজেদের ভূমিতে বসবাস এবং তাদের আইনসম্মত অধিকার পাওয়া নিশ্চিত করাই একমাত্র সমাধান।”
সোমবার জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি স্পষ্টভাবে জানান, “ফিলিস্তিনিদের জন্য কোনো বিকল্প স্বদেশের ধারণা পুরোপুরি প্রত্যাখ্যাত।”
শনিবার কায়রোতে মিশর, জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব এবং কাতারের শীর্ষ কূটনীতিকরা এক বৈঠকে মিলিত হন এবং যেকোনো উপায়ে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক স্থানান্তরের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।
তারা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “আমরা জোর দিয়ে বলছি, কোনো উপায়ে ফিলিস্তিনিদের অবিচ্ছেদ্য অধিকার খর্ব করা যাবে না—হোক তা বসতি স্থাপনের মাধ্যমে, উচ্ছেদ বা ভূমি দখল করে, কিংবা মালিকদের নিজ জমি থেকে সরিয়ে দেওয়া... কোনো পরিস্থিতিতেই এটি গ্রহণযোগ্য নয়।”
শনিবার ট্রাম্প প্রথমবারের মতো মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন, তবে দুই দেশের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে গাজাবাসীদের স্থানান্তর প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়নি। আলোচনায় কেবল ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি ও মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রক্রিয়ার বিষয়গুলো উঠে আসে।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.