ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা ও ইন্দোনেশিয়া ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় সোমবার সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহে এশিয়ার চারটি দেশে বন্যা ও ভূমিধসে প্রায় এক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
গত সপ্তাহে শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা, দক্ষিণ থাইল্যান্ড ও উত্তর মালয়েশিয়ায় পৃথক আবহাওয়া ব্যবস্থার কারণে টানা ভারী বর্ষণ হয়। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির মুখে ইন্দোনেশিয়ার উত্তর সুমাত্রা পরিদর্শন করে প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো বলেন, সরকারের অগ্রাধিকার হলো দুর্গত এলাকায় দ্রুত ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া। বিচ্ছিন্ন গ্রামগুলোতে সহায়তা পাঠাতে ইতোমধ্যে হেলিকপ্টার ও বিমান মোতায়েন করা হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা ও ভূমিধসে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে, শতাধিক মানুষ নিখোঁজ। ২০১৮ সালের সুলাওয়েসি ভূমিকম্প–সুনামির পর এটি দেশটিতে সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাণহানির ঘটনা। ত্রাণ বহনে তিনটি যুদ্ধজাহাজ ও দুটি হাসপাতাল জাহাজ পাঠানো হয়েছে, যদিও অনেক সড়ক এখনও অচল।
অন্যদিকে শ্রীলঙ্কায় ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়া’র প্রভাবে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ৩৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মধ্যাঞ্চলে ত্রাণকর্মীরা গাছ, কাদা ও ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কারে কাজ করছেন। প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমার দিসানায়েকে জরুরি অবস্থা জারি করে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা আমাদের ইতিহাসের অন্যতম বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি।
দেশটির রাজধানী কলম্বোর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় বৃহৎ ত্রাণ অভিযান চলছে। আটকে পড়াদের কাছে খাবার পৌঁছে দিতে সামরিক হেলিকপ্টার ব্যবহৃত হচ্ছে।
দক্ষিণ থাইল্যান্ডেও বর্ষণজনিত বন্যায় কমপক্ষে ১৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটি এক দশকের মধ্যে অন্যতম ভয়াবহ বন্যা। ত্রাণ ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতার অভিযোগে দুই স্থানীয় কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। মালয়েশিয়ার পার্লিস রাজ্যে বন্যায় দু’জনের প্রাণহানি হয়েছে।
বর্ষাকাল, বিরল ক্রান্তীয় ঝড় ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অতিমাত্রার বৃষ্টিপাতের কারণে এশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে।
প্রকাশক: মোঃ শরিফুল ইসলাম। যোগাযোগ: মেডিকেল পূর্ব গেট, বুড়িরহাট রোড, রংপুর, বাংলাদেশ।
Copyright © 2025 RCTV ONLINE. All rights reserved.